—ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ঘিরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তি ছড়িয়েছে। এই আবহে রাজ্যে আসছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ডিজি। মনোনয়ন-পর্বে গোলমালের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষপ করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসাবে কাজ করবেন কমিশনের ডিজি (তদন্ত)। রাজ্যের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখবেন তিনি। রবিবার এমনটাই জানিয়েছে কমিশন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের গোটা প্রক্রিয়া চলাকালীন রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা সুনিশ্চিত করতে মুখ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নোটিসও দিয়েছে কমিশন।
আগামী ৮ জুলাই রাজ্যে এক দফায় পঞ্চায়েত ভোট। মনোনয়নের প্রথম দিনেই রক্ত ঝরেছে রাজ্যে। শুক্রবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে কংগ্রেস কর্মী ফুলচাঁদ শেখকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার, পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার দ্বিতীয় দিনেও উত্তেজনা ছড়ায়। মুর্শিদাবাদের ডোমকলে বাম এবং তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে মারামারি হয়। সারাংপুর অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি বাসির মোল্লার কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান-সহ বিভিন্ন জেলায় মননোয়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর দাবিতে সরব বিরোধীরা। এই অশান্তির আবহে এ বার পদক্ষেপ করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
সংবাদমাধ্যমে গোলমালের খবর জানার পরই স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছে কমিশন। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখবেন কমিশনের ডিজি। পাশাপাশি পঞ্চায়েত ভোটের সময় যে সব এলাকায় গোলমালের আশঙ্কা রয়েছে, সেই স্পর্শকাতর এলাকাগুলি চিহ্নিত করবেন ডিজি। স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করার পর কমিশনকে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেবেন ডিজি। ওই এলাকাগুলিতে পঞ্চায়েত ভোটের সময় বা পরে প্রয়োজনে ‘মাইক্রো হিউম্যান রাইটস অবজার্ভার’ মোতায়নের পরামর্শ দেবেন ডিজি।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় থেকে ফল ঘোষণা পর্যন্ত— পঞ্চায়েত ভোটের গোটা প্রক্রিয়া চলাকালীন রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরস্থিতি সুনিশ্চিত করতে মুখ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নোটিস দিয়েছে কমিশন। এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে সেই রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। মানবাধিকার কমিশনের ডিজিকে সহযোগিতার কথাও বলা হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এবং পরে মানবাধিকার যাতে লঙ্ঘন না হয়, তা সুনিশ্চিত করতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সচিবকেও নোটিস দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
কমিশনের বিবৃতিতে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে অশান্তির ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি, পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় বিজেপি কর্মীকে অপহরণ করে খুনের ঘটনার প্রসঙ্গও তুলে ধরা হয়েছে। এ বার পঞ্চায়েত ভোটে যাতে ২০১৮ সালের মতো পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তার জন্য এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।