আইনজীবী ওয়াই জে দস্তুরের বাড়িতে সিবিআইয়ের অফিসাররা। নিজস্ব চিত্র।
সকাল ১০টায় হাজিরার সময় নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল সিবিআই। কিন্তু কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার রাজীব কুমার সেই আবেদনে সাড়া না দিয়ে এখনও ‘আত্মগোপন’ করে রয়েছেন। তিনি কোথায় রয়েছেন? এখনও পর্যন্ত তা স্পষ্ট নয়। শনিবার বিকেলে সিবিআইয়ের একটি দল সিজিও কমপ্লেক্স থেকে নিজাম প্যালেসের উদ্দেশে রওনা হয়। ওই দলে ছিলেন সিবিআইয়ের তিন জন অফিসার এবং সিআইএসএফ-এর পাঁচ জন।
নিজাম প্যালেসে কিছুটা সময় থেকে তারা ফের বেরিয়ে পড়ে। আইনি পরামর্শ নিতে আইনজীবী ওয়াই জে দস্তুরের বাড়িতে যায় তদন্তকারী দলটি। দেড় ঘণ্টা বৈঠকের পর তদন্তকারী দলটি সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। কী আলোচনা হল, কী পদক্ষেপই বা নিতে চলেছে সিবিআই, এ ব্যাপারে সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তাকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান। যাওয়ার সময় শুধু বলেন, “ যা কাগজ মিলবে তা আমরা খতিয়ে দেখব। আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব। যা হবে দেখতে পাবেন।”
সিবিআই দফতরে যেমন তৎপরতা শুরু হয়েছে, তেমনই রাজীব কুমারও হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন না বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের একাংশ। যদিও সূত্র মারফত্ জানা যাচ্ছে, রাজীব কুমার ইতিমধ্যেই একটি মেল করে সিবিআইয়ের কাছে এক মাসের সময় চেয়েছেন। ছুটিতে রয়েছেন বলেই সময় চেয়েছেন তিনি। তবে তাঁকে সময় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন সিবিআইয়ের একটি সূত্র।
সিবিআইয়ের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাজীব এই মুহূর্তে কলকাতাতেই রয়েছেন। তবে নিজের বাসভবনে রয়েছেন, না কি অন্য কোথাও— সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা নিশ্চিত নয়। আইনজীবীদের একাংশ বলছেন, তিনি হাজিরা এড়িয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন। সে জন্য হয়তো তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করছেন। তাঁদের মতে, সোমবার সুপ্রিম কোর্ট খুললেই আবেদন করবেন রাজীব।
আরও পড়ুন: রাজীবকে কেন হেফাজতে নিতে চায় সিবিআই
রাজীব কুমার এবং তাঁর নিরাপত্তা রক্ষীর মোবাইলে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানা গিয়েছে। হাজিরা না দিয়ে তিনি কোথায় যেতে পারেন? তা নিয়ে সিবিআইয়ের অন্দরেও আলোচনা চলছে। পুলিশের একটি সূত্রে খবর, ৩৪ নম্বর পার্ক স্ট্রিটের যে আবাসনে রাজীব কুমার থাকেন, এ দিন সকাল সেখান থেকে তাঁকে বেরতে দেখা যায়নি। রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি-র এডিজি পদে রয়েছেন তিনি। কাজের প্রয়োজনে ভবানী ভবনে যেতে পারেন। কিন্তু এ দিন সেখানেও তিনি যাননি। জানা গিয়েছে, কয়েকদিন ছুটিতে রয়েছেন তিনি। অন্য কোথাও তাঁর যাওয়ার সম্ভাবনাও খুবই কম।
শুক্রবার হাইকোর্টে তাঁর গ্রেফতারি সংক্রান্ত ‘রক্ষাকবজ’ উঠে যায়। ওই দিনই বিকেলে তাঁর ৩৪ নম্বর পার্ক স্ট্রিটের ঠিকানায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৬০ ধারায় সিবিআই তাঁকে নোটিস পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: দেহরক্ষীর ফোন বন্ধ, রাজীব এখন কোথায়