ছবি: পিটিআই।
আমবাঙালির ডাল-ভাত যদিও বা জুটছে, আলু কিনতে গিয়ে মাথায় হাত! ডিমের ঝোলে, পোস্তয় একটু বেশি আলু দিতে গিয়ে দু’বার ভাবছেন মানুষ। এমনকি, বঙ্গীয় বিরিয়ানির রাজতিলক যে আলু তাতেও বহু জায়গায় টান পড়েছে!
আলুর দামবৃদ্ধি নতুন নয়। কিন্তু গত শুক্রবার রাজ্য সরকার আলুর দাম বেঁধে দেওয়ার পরেও রবিবারের বাজারে তার তেমন প্রতিফলন দেখা যায়নি। রাজ্য সরকার পাইকারি বাজারে কিলোগ্রাম প্রতি ২২ টাকা এবং খুচরো বাজারে কিলোগ্রাম প্রতি ২৫ টাকা দর বেঁধে দিয়েছে। কিন্তু এ দিন বহু বাজারে কিলোগ্রাম প্রতি ৩০-৩৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, পাইকারি বাজারে দাম কমেনি। তাই তাঁরাও দাম কমাতে পারছেন না। অন্যান্য আনাজের দামও চড়া রয়েছে। সব মিলিয়ে আনাজের বাজারে আগুন পরিস্থিতি।
কলকাতা ও শহরতলির বেশির ভাগ বাজারে জ্যোতি ও চন্দ্রমুখী আলু যথাক্রমে ৩০ ও ৩৫ টাকা কিলো দরে বিক্রি হয়েছে। সুফল বাংলার স্টলগুলিতে অবশ্য আলু মিলেছে ২৫ টাকা কেজি দরেই।
আলুর এই লাগামছাড়া দামের পিছনে অসাধু ব্যবসায়ীদের দায়ী করছেন কোলে মার্কেটের পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীদের একাংশ। তাঁরা জানান, ১ কিলোগ্রাম আলু হিমঘরে আনতে এ বার আনুমানিক ১২ টাকা খরচ হয়েছে। গুদাম ভাড়া ও অন্যান্য সব দাম মিটিয়ে যখন ওই আলু বেরোয় তখন তার দাম হয় ১৪ টাকা। পাইকারি বাজার পর্যন্ত আসতে খরচ বড়জোর ১৭ টাকা হওয়া উচিত।
পূর্ব বর্ধমানে ২৮ টাকা কেজি দরে এ দিন আলু বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে। বীরভূমের বোলপুর, সিউড়ি ও রামপুরহাটের বাজারগুলিতে আলু বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে।
এ দিন নদিয়ার বিভিন্ন বাজারে আলু ২৮ থেকে ৩৫ টাকা কিলো দরে বিক্রি হয়েছে। তমলুক শহরে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসকের অফিস চত্বরে কৃষি বিপণন দফতরের ‘সুফল বাংলা’ স্টলে আলুর দাম ২৫ টাকা। অথচ এ দিন তমলুকের বড়বাজারে জ্যোতি আলু ৩০ টাকা ও চন্দ্রমুখী ৩৫ টাকা কেজি দরে কিনতে হয়েছে। মেদিনীপুর, খড়্গপুর, ঘাটাল-সহ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রধান বাজারগুলিতেও জ্যোতি আলু বিকিয়েছে ২৮-৩০ টাকা কেজিতে। বাঁকুড়ার বিভিন্ন খুচরো বাজারে আলুর দর কেজি প্রতি ছিল ২৫ থেকে ২৮ টাকা।
রাজ্য টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে বলেন, ‘‘আলু ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্প্রতি মিটিং হয়েছে। সেখানে উনি ব্যবসায়ী সমিতির কাছেই আলুর কত দাম হতে পারে তা সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন। যদি তা না নেওয়া যায় তাহলে মুখ্যমন্ত্রীই আলুর দাম নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’’ আলু ব্যবসায়ী সমিতি দাম নিয়ে এখনও সিদ্ধান্তে নেয়নি বলে জানান তিনি।
আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে এখনও না আসা নিয়ে প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “বাজারগুলিতে এখনও কিছুটা দাম বেশি থাকতে পারে। টাস্কফোর্সের প্রতিনিধিরা বাজারে বাজারে ঘুরতে শুরু করেছেন। শীঘ্রই তা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করা যায়।”