ফাইল চিত্র।
সুসংবাদ এসেছিল, গাঙ্গেয় বঙ্গের বর্ষণ-ঘাটতির জ্বালা অনেকাংশে জুড়িয়ে দিতে আসছে বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ। হাওয়া অফিসের সেই বার্তায় আশা জেগেছিল জোরালো বৃষ্টির, উত্তরবঙ্গ যার দাক্ষিণ্য পেলেও দক্ষিণবঙ্গ এ বার এখনও পর্যন্ত কার্যত বঞ্চিতই থেকে গিয়েছে। সেই বঞ্চনার কিছুটা সুরাহার আলো দেখাচ্ছিল আসন্ন নিম্নচাপ।
কিন্তু সেই আশা কতটা পূরণ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ও সংশয় জেগেছে সোমবার। কারণ, যাকে মুশকিল-আসান বলে ধরে নেওয়া হচ্ছিল, মুখ ঘোরাচ্ছে সেই নিম্নচাপও। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের খবর, নিম্নচাপটি শক্তি বৃদ্ধি করে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ঠিকই। কিন্তু গাঙ্গেয় বঙ্গে না-এসে পথ বদলে সে বরং চলে যাবে পড়শি ওড়িশা এবং তার লাগোয়া অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে।
আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস এ দিন জানান, কলকাতা এবং লাগোয়া জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। তবে ওড়িশা সংলগ্ন জেলাগুলিতে নিম্নচাপের প্রভাবে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আজ, মঙ্গলবার থেকেই বৃষ্টি বাড়তে পারে ওই সব জেলায়। সেখানে ভারী বৃষ্টি হতে পারে বুধ-বৃহস্পতিবারেও।
এ বছর গাঙ্গেয় বঙ্গে বর্ষা কৃপণ। মৌসম ভবনের হিসাব, ১ জুন থেকে ৮ অগস্ট পর্যন্ত গাঙ্গেয় বঙ্গে বৃষ্টি-ঘাটতি ৪৭ শতাংশ। ইদানীং দিনে-রাতে দু’-এক পশলা বৃষ্টি হলেও তা ঘাটতি পূরণের পক্ষে যথেষ্ট নয়। গভীর নিম্নচাপটি গাঙ্গেয় বঙ্গে এলে কিছুটা ঘাটতি মিটতে পারত। সুবিধা হত ধান ও পাট চাষের। আবহবিদদের অনুমান, নিম্নচাপের পথ ওড়িশার দিকে বেঁকে যাওয়ায় অত্যধিক বর্ষণ-ঘাটতিতে পীড়িত জেলাগুলির কোনওটিতেই তেমন জোরালো বৃষ্টি হবে না। অথচ রাজ্যের বেশির ভাগ কৃষিকাজ হয় ওই জেলাগুলিতেই। আশঙ্কা করা হচ্ছে, বৃষ্টি-ঘাটতির কুপ্রভাব এ বার চাষের উপরেও পড়বে।
আবহাওয়া দফতর ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা কম বলে জানালেও দুর্যোগের আশঙ্কার বিষয়টি মাথায় রেখে বিদ্যুৎ পরিষেবা ও পরিকাঠামো ঠিক রাখার জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতর। এ দিন সব জেলার আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিয়ো-বৈঠক করেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বর্ষার কারণে এমনিতেই কন্ট্রোল রুম (৮৯০০৭৯৩৫০৩ এবং ৮৯০০৭৯৩৫০৪) চালু রয়েছে।