মোমিনপুরে সেলিমের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করতে গিয়ে টুইটে ‘পতিতা’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তা নিয়ে দলের ভিতরে-বাইরে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। এ বার সেলিমের বাড়ির দুয়ারে বিক্ষোভ আছড়ে পড়ল। বুধবার মোমিনপুরে সেলিমের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান খিদিরপুর এলাকার যৌনকর্মীদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, ‘পতিতা’ শব্দে তাঁদের অসম্মান করা হয়েছে। তাই সেলিমকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। সিপিএম সূত্রে খবর, সেলিম ওই সময়ে বাড়িতে ছিলেন না। পরে সেলিম আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আমি বিক্ষোভের ব্যাপারে কিছু জানি না।’’
সিমিএমের একাংশের মতে, তৃণমূলই এই বিক্ষোভ সংগঠিত করেছে। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে এর কোনও সমর্থন মেলেনি। তবে গোটা ঘটনায় যারপরনাই অস্বস্তিতে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।
অভিষেককে কটাক্ষ করতে গিয়ে গত সোমবার সেলিম টুইটারে লিখেছিলেন, ‘‘অভিযোগ, তিনি (অভিষেক) তাঁর অসাধু সম্পদ রাখার করার জন্য ১৫ জন বিদেশি পতিতার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছিলেন।’’ গোল বাধে এই ‘পতিতা’ শব্দটি নিয়ে। সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক কনীনিকা ঘোষ বোস বলেন, ‘‘আমরা প্রস্টিটিউট (পতিতা) শব্দটা বলি না। আমরা সেক্স ওয়ার্কার (যৌনকর্মী) বলি।’’ সেলিম ইংরেজি টুইটে ‘প্রস্টিটিউট’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। একই কথা বলেছিলেন সিটু নেতা অনাদি সাহুও।
পাল্টা সেলিমকে বিঁধতে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ‘‘কয়েক বছর আগের কথা। পার্টির কাজ আছে বলে এক নামী নেতা বান্ধবীর সঙ্গে একটি রাজ্যের হোটেলে চলে যান। তাঁর বিমান এবং হোটেলের কাগজ তাঁর বাড়িতে দেন পার্টিরই আর এক নেতা। আমাদেরও দেন। চূড়ান্ত অশান্তি হয়। আমরা সৌজন্যের খাতিরে তখন ছাপিনি। এ বিষয়ে আপনার কিছু জানা আছে মহম্মদ সেলিম?’’
সোমবারের টুইট নিয়ে সেলিম দুঃখপ্রকাশ করেননি। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে টুইটের ‘ভুল’ কৌশলে শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করেন সেলিম। ফেসবুকে একটি পোস্টার পোস্ট করেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক। তাতে লেখেন, “১৫ জন বিদেশি যৌনকর্মীর অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা পাচারে অভিযুক্ত।” কিন্তু তাতেও ক্ষোভের আগুন নেভেনি বলেই মনে করা হচ্ছে। যা বুধবার পৌঁছে গেল মোমিনপুরে সেলিমের বাড়ির দোরগোড়ায়।