বিধ্বংসী আগুনে ছারখার সবকিছু। —নিজস্ব চিত্র।
ধূপগুড়ির কাপড়ের বাজারে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। আগুনের লেলিহান শিখায় ভস্মীভূত শতাধিক দোকান। এখনও পর্যন্ত হতাহতের কোনও খবর নেই। তবে এই ঘটনায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। সারারাত দমকলের প্রেচষ্টার পর শুক্রবার আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু এখনও কিছু দোকানের ভিতরে জ্বলছে আগুন। ৩টি দমকলের ইঞ্জিন সেই আগুন নেভানোর কাজ করছে।
ধূপগুড়ি বাজারের থানা রোডের পার্শ্ববর্তী কাপড়পট্টিতে বিধ্বংসী আগুন লাগে। রাত ২টো বেজে ২০ মিনিট নাগাদ গাড়িতে চেপে যাওয়ার সময় এক ব্যক্তি প্রথম আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পান। তিনিই ধূপগুড়ি থানায় ফোন করে খবর দেন। হাঁকডাক করে স্থানীয় বাসিন্দাদের জড়ো করেন। খবর দেওয়া হয় দমকলকেও। সেই মতো প্রথমে দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয়।
কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই জল ফুরিয়ে গেলে বিপত্তিতে পড়েন দমকলকর্মীরা। তার উপর বাদ সেধেছে জলের আকাল। কাছেপিঠের জলাশয়গুলি বেআইনি ভাবে ভরাট করাতেই আগুন নেভানোর জন্য জল পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। আশেপাশে জল না পেয়ে পিএইচই-তে জল ভরতে নিয়ে যাওয়া হয় ইঞ্জিনটিকে। কিন্তু সেখানকার ট্যাঙ্কেও জল পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে জলের সন্ধানে অন্যত্র যেতে হয়। তার মধ্যেই দ্রুতগতিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ফালাকাটা, ময়নাগুড়ি এবং মালবাজারের দমকলবাহিনীকে খবর দেওয়া হয়। সেখান থেকে দু’টি করে দমকলের ইঞ্জিন এসে পৌঁছয়। ইঞ্জিন আনা হয়েছিল দিনহাটা, তুফানগঞ্জ থেকেও।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে। —নিজস্ব চিত্র।
আরও পড়ুন: লকডাউন যাঁদের যৌনকর্মী বানাল, সন্ধ্যা-মালতি-শ্যামলীদের কথা
খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্থানীয় বিধায়ক মিতালী রায়। আগুন নেভানোর প্রক্রিয়া তদারকি করছেন তিনি। তাঁর কাছ থেকে আগুন লাগার ঘটনার খোঁজ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। ধূপগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ কুমারও ঘটনাস্থলে এসেছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নগর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে ফোন করে গোটা ঘটনা জানিয়েছেন। জেলা পরিষদের অধীনস্থ এই বাজার ধুপগুড়ি পৌরসভা হাতে তুলে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার সব রকম ভাবে ব্যবসায়ীদের পাশে আছে। ক্ষতিপূরণ এবং ঘর বানিয়ে দেওয়ার বিষয়টিও সরকার দেখবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: জিতেন্দ্রকে মেনে নিতে পারব না, ফেসবুকে তোপ দাগলেন বাবুল
আগুন লাগার কারণ এখনও স্পষ্ট ভাবে জানা যায়নি। তবে আগুন নেভাতে না পারার জন্য জলের অভাবকেই দায়ী করেছেন স্থানীয়রা। দমকলের জল না পাওয়ার ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরাও। তাঁদের অনেকের মতে, জলাশয় অবৈধভাবে ভরাটের ফল পেল ধূপগুড়ির ব্যবসায়ীরা। দমকল থাকলেও জল না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে পারেনি সময়মতো।