এনআরএস হাসপাতালের সামনে ডাক্তারদের আন্দোলন। ছবি: পিটিআই।
স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশিকাই সার। চালু হল না আউটডোর পরিষেবা। শুক্রবারও যথারীতি ব্যাহত এনআরএসের স্বাস্থ্য পরিষেবা। এখনও তালা ঝুলে রয়েছে হাসপাতালের মেন গেটে। এমারজেন্সি বন্ধ রেখেই চলছে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি। চালু হয়নি আউটডোর পরিষেবাও। ফলে গত কয়েক দিনের মতোই রোগী প্রত্যাখ্যানের ঘটনাও ঘটছে।
একই অবস্থা শহরের অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজগুলিতেও। সেখানেও প্রায় ডাক্তার শূন্য। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, আরজিকর, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, এসএসকেএম-সহ সমস্ত সরকারি হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্য পরিষেবা সেই সঙ্কটেই।
৬০ ঘণ্টা আন্দোলন চালানোর পর বৃহস্পতিবারই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে মুখ খোলেন। তাঁর নির্দেশে স্বাস্থ্য দফতর নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছিল, আউটডোর পরিষেবা বন্ধ রেখে যাঁরা কর্মবিরতি করবেন অথবা বাধা দেবেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও এ দিন এনআরএসের চিত্রটা বিন্দুমাত্র বদলায়নি। উল্টে নীলরতন সরকার হাসপাতাল চত্বরে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ থেকে জুনিয়র ডাক্তাররা এসে ভিড় করেছেন। তাঁদের এই আন্দোলনকে সমর্থন জানাচ্ছেন সিনিয়র ডাক্তাররাও।
আরও পড়ুন: কর্মবিরতিতে চিকিৎসা মিলল না দুধের শিশুর, জন্মে ৩ দিনেই মরতে হল তাকে
আন্দোলনকারীদের একটাই দাবি, মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাসপাতালে এসে বিবৃতি দিয়ে জানাতে হবে এই ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না। ডাক্তারদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করারও বন্দোবস্ত করতে হবে। জুনিয়র চিকিৎসকরা তাঁদের দাবিতে অনড় থাকলেও রাজ্য সরকারও এখনও পর্যন্ত কড়া মনোভাব দেখাচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে স্বাস্থ্য ভবনের তরফ থেকে দু’টি নির্দেশিকা জারি করা হয়। যার একটিতে প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু করে ডাক্তারদের কাজে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আরেকটিতে, রাজ্যের কোথাও আউটডোর বন্ধ রাখা যাবে না বলে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। এই দু’টি নির্দেশিকা জারি হওয়ার আগেই এসএসকেএমে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছেন। সত্ত্বর কাজে যোগ না দিলে হস্টেল ছাড়ারও নির্দেশ দেন তাঁদের। এর পরই কার্যত পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।
এনআরএসে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান, বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারদের কাজে যোগ দেওয়ার অনীহার পাশাপাশি গণ ইস্তফা দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে ১৮ জন চিকিৎসক ইস্তফা দিয়েছেন। এনআরএসে ৭০ জন হাউসস্টাফ ইস্তফাপত্র তৈরি করে ফেলেছেন বলে খবর। যে কোনও মুহূর্তে তাঁরাও ইস্তফা দিতে পারেন। শুক্রবার সকালে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের দুই চিকিৎসক ইস্তফাপত্র জমা দেন। তাঁরা হলেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিভাগের প্রধান নির্মল বেরা এবং সহকারী অধ্যাপক উত্তম মজুমদার। অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজগুলিতেও একই অবস্থা। গতকাল রাতেই ইস্তফা দিয়েছেন এনআরএসের অধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষ।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।