ইয়াসের দাপটে তছনছ হয়ে গিয়েছে দিঘার সৈকত সরণি(বাঁ দিকে)। সারাইয়ের কাজ চলছে।(ডান দিকে) নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশের পরই দিঘাকে পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে আনার কাজ জোর কদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। গত ২৬ মে দিঘার বুকে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। সেই সঙ্গে সমুদ্রের প্রবল জলোচ্ছ্বাসে তছনছ হয়ে গিয়েছে বাঙালির অন্যতম প্রিয় পর্যটনস্থল। উপড়ে গিয়েছে কংক্রিটের তৈরি বিস্তীর্ণ সৈকত সরণি। সমুদ্রের বাঁধ রক্ষা করতে যে সব বড়বড় পাথর ফেলা হয়েছিল, জলের তোড়ে চলে এসেছিল রাস্তার উপরে। শুক্রবার দিঘা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সাধের দিঘার এমন ভয়ানক দুরবস্থা দেখে আবেগ চেপে রাখতে পারেননি তিনি।
মমতা নির্দেশ দেন, যত দ্রুত সম্ভব দিঘাকে তার পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে আনতে হবে। লক্ষ লক্ষ পর্যটক দিঘার যে সৌন্দর্যের টানে ছুটে আসেন, তা যেন কিছুতেই ম্লান না হয়ে যায় সে দিকে কড়া নজর দিতে হবে। নির্দেশ দেন, দ্রুত সারতে হবে সব কাজ। এ ব্যাপারে কোনও ভাবেই দেরি বরদাস্ত করা হবে না। একই সঙ্গে তিনি বার্তা দিয়েছিলেন, জলে টাকা না ফেলে জলের দাপট রুখতে যত টাকা প্রয়োজন সেটা কাজে লাগাতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর এমন নির্দেশ পেয়ে কাজে আর দেরি করেনি স্থানীয় প্রশাসন। নিউ দিঘা থেকে ওল্ড দিঘা পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা বিপুল পরিমাণ পাথর সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। শনিবার মুখ্যমন্ত্রী দিঘা থেকে ফিরে আসেন। তার মাত্র দু’দিনেই সমুদ্র তটের চেহারা অনেকটাই ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ (ডিএসডিএ)। যে সমস্ত জায়গায় সৈকত লাগোয়া রাস্তা ভেঙে গিয়েছে, সেগুলোও দ্রুত মেরামত করা হবে বলে জানিয়েছে ডিএসডিএ। রাজ্যে কার্যত লকডাউনের মাঝেই দিঘাকে যতটা সম্ভব সাজিয়ে তোলাই এখন জেলা প্রশাসনের মূল উদ্দেশ্য।
দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান রাজ্যের মৎস্য মন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, “ইয়াসে যতটা না ক্ষতি হয়েছে, তার দ্বিগুণ ক্ষতি হয়েছে জলোচ্ছ্বাসের কারণে। এই ক্ষত সহজে সারানো যাবে না। দিঘা সমুদ্রতটের পাশে থাকা হাজার দুয়েক দোকান প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে।” অখিল আরও জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দিঘার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পর্যালোচনা করে দ্রুত সেই রিপোর্ট রাজ্যকে দেবে ডিএসডিএ। সেই কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব দিঘার সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনার জন্যও প্রশাসনের তরফে রাতদিন কাজ চলছে।