ছবি এপি।
আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা খতিয়ে দেখতে গঠন করা হয়েছে যে-টাস্ক ফোর্স, তার সদস্যের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল! হাওড়ার সাঁকরাইলে এই নিয়ে বিতর্ক বেধেছে জোর।
আমপানের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা যাচাই করতে বিডিওদের নেতৃত্বে জেলা জুড়ে টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। তালিকা নিয়ে জেলার মধ্যে প্রথম শোরগোল হয় সাঁকরাইলেই। বাড়ির ক্ষতি না-হওয়া সত্ত্বেও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় নাম উঠেছিল সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির নারী-শিশু ও ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ সানন্দা ঘোষের। তিনি তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করেছেন। অথচ তাঁকেও টাস্ক ফোর্সের সদস্য করা হয়েছে।
আর এ নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিরোধীরা তো বটেই, ক্ষুব্ধ শাসক দলের একাংশও। বিডিও সন্দীপ মিশ্র বলেন, ‘‘জেলাশাসকের নির্দেশ আছে। টাস্ক ফোর্সে ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষকে সদস্য হিসেবে রাখতে হবে। তা ছাড়া সানন্দাদেবীর নাম ক্ষতিপূরণের প্রথম তালিকায় থাকলেও তিনি তা নিজেই প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তাঁকে ডাকতে আর সমস্যা কোথায়?’’
আরও পড়ুন: ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে ফের বাস-জট, শঙ্কা দুর্ভোগের
কিন্তু কংগ্রেস নেতা অলোক কোলে মনে করেন, ‘‘নিয়ম যা-ই থাক, সাঁকরাইলের বিষয়টি আলাদা।’’ তিনি বলেন, ‘‘যে-হেতু ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, তাঁকে টাস্ক ফোর্সের সদস্য করার আগে সব জানিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া উচিত ছিল।’’ তৃণমূলের একটি অংশও মনে করছে, এটা অনৈতিক। এতে মানুষের কাছে আরও ভুল বার্তা যাবে। জেলা (সদর) তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী অরূপ রায় এক ধাপ এগিয়ে বলেন, ‘‘সাঁকরাইলের বিডিওকে শো-কজ় করা হয়েছে। তিনি কী ভাবে টাস্ক ফোর্স গঠন করলেন?’’ বিডিও অবশ্য দাবি করেছেন, শো-কজ়ের খবর তাঁর জানা নেই। কোনও মন্তব্য করতে চাননি জেলাশাসক মুক্তা আর্য।
আরও পড়ুন: সিএএ থেকে করোনা, মমতাকে তোপ নির্মলার, পাল্টা উত্তর ডেরেকের
সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ৪৬ জন। তার মধ্যে বাড়ির কোনও ক্ষতি না-হওয়া সত্ত্বেও কয়েক জন কর্মাধ্যক্ষ-সহ ৩০ জনের নাম ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় ওঠে বলে অভিযোগ। বিজেপির বিরোধী দলনেতা-সহ কয়েক জন সদস্যেরও নাম ছিল। এর পরে জেলার নানা প্রান্ত থেকে অভিযোগ উঠতে থাকায় জেলাশাসক তালিকা যাচাই করার জন্য টাস্ক ফোর্স গঠনের নির্দেশ দেন। সাঁকরাইলে কোনও ক্ষতিগ্রস্তকে এখনও টাকা দেওয়া হয়নি বলে প্রশাসন জানিয়েছে। আন্দুলের বাসিন্দা সানন্দা স্বীকার করেছেন, ঝড়ে তাঁর দোতলা পাকা বাড়ির ক্ষতি হয়নি। তিনি বলেন ‘‘প্রথম তালিকা বিভ্রান্তিকর এবং ভুলে ভরা ছিল। নিজেই আবেদন করে আমার নাম বাদ দিতে বলি। ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ হিসেবেই আমি টাস্ক ফোর্সে জায়গা পেয়েছি।’’ সাঁকরাইলে টাস্ক ফোর্সের প্রথম বৈঠক হয় শনিবার। পরের বৈঠক মঙ্গলবার।