কেন্দ্রীয় দলের সঙ্গে দেখা করার পর বাম ও কংগ্রেস নেতারা। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে সফররত কেন্দ্রীয় দলের সঙ্গে দেখা করে ঘূর্ণিঝড় ‘‘আমপান’-এ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য আরও সরকারি সাহায্যের দাবি করল বিরোধী দলগুলি। সাহায্য যাতে দুর্গত মানুষের হাতে পৌঁছয়, সেই দাবি আগেই করছিল বিজেপি। কেন্দ্রীয় দলের কাছে গিয়ে অন্য দুই বিরোধী বাম ও কংগ্রেসও কার্যত তেমন দাবিই করেছে। তৃণমূলের তরফে অবশ্য ‘রাজনৈতিক অভিযোগ’ অস্বীকার করে রাজ্যকে সাহায্যের জন্য কেন্দ্রের উপরে চাপ বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে বিরোধীদের কাছে।
নবান্নে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করতে যাওয়ার আগে শনিবার দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত হোটেলে বাম, কংগ্রেস ও বিজেপির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন আন্তর্মন্ত্রক কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বিধায়কদের দল এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ও বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল রাজ্যের দুর্গত এলাকায় তাঁদের ঘুরে আসার অভিজ্ঞতা কেন্দ্রীয় দলকে জানিয়ে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ ঘোষণার দাবি তুলেছেন। তাঁদের দাবি, প্রকৃতই বিপন্ন মানুষের কাছে যাতে সরকারি সাহায্য পৌঁছয়, তেমন ব্যবস্থা করা হোক। দুর্যোগে আবাস যোজনারই বেশির ভাগ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করে সুজনবাবুদের দাবি, ওই প্রকল্পে কাঁচার পরিবর্তে পাকা বাড়ি গড়ে দেওয়া হোক।
দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে বিজেপির প্রতিনিধিদল অভিযোগ করেছে, যাঁদের পাকা বাড়ি, তাঁদের কাঁচা বাড়ি দেখানো হচ্ছে। এই রকম দু’হাজার লোকের তালিকা তাঁরা সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। ত্রাণের টাকাও শাসক দল লুঠ করছে বলে অভিযোগ করে দিলীপবাবুদের দাবি, বঞ্চিত বা ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ জানানোর সুবিধার্থে কোনও ওয়েবসাইট বা অ্যাপ খোলা হোক।
আরও পড়ুন: ‘কেন্দ্রের পরামর্শে উপকৃত হবে বাংলা’
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় দল সরকারি স্তরে কথাবার্তা বলে কাজ করছে। আশা করব, তাদের মূল্যায়নে বাস্তব পরিস্থিতির প্রতিফলন ঘটবে।’’ পাশাপাশিই তাঁর মন্তব্য, ‘‘বিরোধীদের বলব, সব কিছুতে তৃণমূলকে নিয়ে দুঃস্বপ্ন দেখবেন না! ত্রাণ নিয়ে দলবাজি, রাজনীতির অভিযোগ মনগড়া। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, ত্রাণের কাজ করবে প্রশাসন।’’ পার্থবাবুর দাবি, ঝড়ে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকার মতো। কেন্দ্র মাত্র হাজার কোটি টাকা দেবে বলেছে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই ৬ হাজার ২৫০ কোটি টাকা খরচ করেছে। বিরোধীদের উদ্দেশে পার্থবাবুর আবেদন, ‘‘পিএম কেয়ার ফান্ড থেকে পরিযায়ীদের ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের উপরে চাপ দিন।’’