কলকাতা বন্দরে বেঁধে রাখা হয়েছে জাহাজ। নিজস্ব চিত্র
আমপানের জেরে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে রাজ্যের বন্দরগুলিতে। প্রবল ঝড়ে দুর্ঘটনা এড়াতে বন্দরের অধিকাংশ জাহাজ গভীর সমুদ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ এড়িয়ে অন্য দিকে যেতে বলা হয়েছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে জাহাজ চলাচল। কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বন্দরের সম্পত্তি ও বাণিজ্যিক জাহাজগুলির যাতে কোনও ক্ষয়ক্ষতি না হয়, সে জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুরে রাজ্যের উপকূলে আমপান আছড়ে পড়তে পারে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। সেই বিপর্যয়ের কথা মাথায় রেখেই সব বন্দরেই কার্যত জাহাজ চলাচল বন্ধ। জাহাজ গভীর সমুদ্রে থাকলে ঘূর্ণিঝড়ে কোনও ক্ষতি হয় না। পোর্ট ট্রাস্টের সিনিয়র জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বন্দরে নোঙর করে থাকা জাহাজগুলিকে আরও শক্তপোক্ত ভাবে আটকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কলকাতা বন্দরে জাহাজ চলাচল বন্ধ। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।
পোর্ট ট্রাস্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সুন্দরবন এলাকায় নোঙর করে থাকা ১৯টি ভেসেলকে গভীর সমুদ্রে পাঠানো হয়েছে। ডায়মন্ড হারবার ও সাগর বন্দরে ভেসেল ঢোকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পণ্য ওঠানামাও বন্ধ। এই দুই বন্দরে বন্দরে থাকা ভেসেলগুলিকেও পাঠানো হয়েছে গভীর সমুদ্রে। বন্দরের বার্জগুলিকে সুরক্ষিত স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। হলদিয়ায় আপাতত জাহাজ চলাচল বন্ধ হলেও সকালের জোয়ারে তিনটি জাহাজ বন্দর ছেড়েছে, এবং দু’টি শিপ বন্দরে ঢুকেছে। পাইলট ভেসেল ‘মা গঙ্গা’ এবং চারটি পাইলট লঞ্চকেও বন্দরের নিরাপদ স্থানে নোঙর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আমপান আছড়াবে সুন্দরবনকে কেন্দ্র করে, তাণ্ডব চালাবে ৭ জেলায়
আরও পড়ুন: বাতাসের তীব্রতা মাপতে ব্যর্থ যন্ত্র, গত শতকের বিধ্বংসীতম ঘূর্ণিঝড়ে ছিন্নভিন্ন হয় ওড়িশা
কলকাতা বন্দরে এই মুহূর্তে মোট ৩০টি বাণিজ্যিক জাহাজ রয়েছে বলে জানিয়েছে পোর্ট ট্রাস্ট। এ ছাড়া হলদিয়া বন্দরেও রয়েছে ১১টি বাণিজ্যিক জাহাজ। বন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে আলাদা করে সাগরের সুভাষ ভবন, হলদিয়ার জহর টাওয়ারে খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম।
রাজ্য প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, কলকাতায় গঙ্গার সব ঘাটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘাটগুলিতে কোনও ক্ষতি হলে সঙ্গে সঙ্গে মেরামতির জন্য কর্মীদের রাখা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে একটি কুইক রেসপন্স টিমও।