Amphan

অতিপ্রবল হয়ে বাংলাকেই চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়

আবহবিজ্ঞানীরা জানান, সমুদ্রে জলতলের উষ্ণতা ২৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলেই তা ঘূর্ণিঝড় তৈরিতে সাহায্য করে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২০ ০১:৫৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই, রবিবার দুপুরে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে ‘আমপান’। আপাতত তার রক্তচক্ষু বঙ্গের দিকেই। মৌসম ভবন জানায়, আজ, সোমবার সে মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়ের (‘এক্সট্রিমিলি সিভিয়ার সাইক্লোন’) চেহারা নেবে। বুধবার সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের দিঘা এবং বাংলাদেশের হাতিয়ার মাঝখান দিয়ে স্থলভূমিতে ঢুকতে পারে আমপান। বর্ষা এ দিনই আন্দামানে পৌঁছেছে। আগামী কয়েক দিনে আন্দামানের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়বে সে।

Advertisement

আবহবিজ্ঞানীরা জানান, সমুদ্রে জলতলের উষ্ণতা ২৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলেই তা ঘূর্ণিঝড় তৈরিতে সাহায্য করে। বঙ্গোপসাগরের জলের উষ্ণতা তার থেকে বেশ কিছুটা বেশি হওয়ায় আমপানের শক্তি দ্রুত বেড়েছে। আমপান উপকূলের কাছে এসে কিছুটা শক্তি খোয়াবে। তার ফলে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে সে স্থলভূমিতে প্রবেশ করবে।

কেন্দ্রীয় আবহবিজ্ঞান বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আছড়ে পড়ার সময় উপকূল এলাকায় ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার বেগে বইবে ঘূর্ণিঝড়। কিছু সময়ের জন্য তার গতিবেগ ১৫৫ কিলোমিটারও হতে পারে। উপকূলে ঝোড়ো হাওয়া-সহ বৃষ্টি শুরু হতে পারে মঙ্গলবারেই। বুধবার গাঙ্গেয় বঙ্গের প্রায় সর্বত্র বৃষ্টি হবে। কোনও কোনও এলাকায় ভারী বৃষ্টি, কোথাও কোথাও অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। মৎস্যজীবীদের সাগরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: আরও দুই করোনা পজ়িটিভ, ফেসবুকে ঘোষণা মহুয়ার

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বিপর্যয় মোকাবিলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। উপকূলরক্ষী বাহিনীও প্রস্তুত। জলপথ ও আকাশপথে নজরদারি চলছে। মাইকে প্রচার চলছে দিঘা, রামনগর, মন্দারমণি-সহ উপকূলবর্তী এলাকায়। ৪৩টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র, ৩০টি বন্যাত্রাণ কেন্দ্র এবং প্রতিটি কেন্দ্রের কাছাকাছি তিনটি স্কুলবাড়ি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যে-সব বন্যাত্রাণ কেন্দ্রে নিভৃতবাসের ব্যবস্থা হয়েছে, সেগুলি বাদ দিয়ে অন্যত্র এই আয়োজন হচ্ছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের (এনডিআরএফ) ৩২ জন সদস্য এ দিন দিঘায় পৌঁছেছেন। অসামরিক প্রতিরক্ষার দল থাকছে দিঘা ও হলদিয়ায়। জেলার সব ব্লকে শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের জেলা আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় হালদার বলেন, ‘‘সব রকমের প্রস্তুতি রয়েছে।’’

উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি, মিনাখাঁ ব্লকের বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রকে জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। ত্রাণ শিবিরে মাস্ক ও সাবান থাকবে। হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালির দু’টি ব্লকের অনেক জায়গায় নদীবাঁধের অবস্থা ভাল নয়। তা নিয়ে প্রশাসন উদ্বিগ্ন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলে মাইকে সতর্ক করা হচ্ছে। গোসাবার দুর্বল নদীবাঁধে জরুরি মেরামতি চলছে। কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে ব্লকের ১৪টি পঞ্চায়েতে। বিভিন্ন স্কুলে আশ্রয় শিবির হয়েছে। জেলাশাসক পি উলগানাথন জানান, ঘোড়ামারা থেকে লোকজনকে সরিয়ে আনা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement