Abbas Siddique

আব্বাসের সঙ্গে রফার পথে সিপিএম, সময় নিল কংগ্রেস

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০১:২৬
Share:

বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, আব্বাস সিদ্দিকি এবং বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। ফাইল চিত্র।

শেষ হয়েও হচ্ছে না শেষ!

Advertisement

সিপিএম ও কংগ্রেসের সমঝোতা চূড়ান্ত হয়েছে বলে দু’পক্ষের নেতৃত্ব ঘোষণা করে দিলেও জোটের সার্বিক চিত্র পরিষ্কার হল না এখনও। মাঝখানে কাঁটা হয়ে এখনও বিঁধে থাকল আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) সঙ্গে রফার প্রশ্ন। তিন পক্ষই নমনীয় হয়ে আলোচনা চালালেও বুধবার বেশি রাত পর্যন্ত চূড়ান্ত মীমাংসা অধরা।

আব্বাসের দলের জন্য জায়গা ছেড়ে রেখেই সমঝোতা চূড়ান্ত হওয়ার কথা মঙ্গলবার ঘোষণা করেছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। আইএসএফ-সহ আরও কিছু দলের কথা মাথায় রেখে তাঁরা কোনও আসন-সংখ্যা ঘোষণা করেননি। তার পরের ধাপ হিসেবে এ দিন রাতে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন সিপিএম, প্রদেশ কংগ্রেস এবং আইএসএফ নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, প্রকাশ্যে আব্বাস যত আসনের দাবির কথাই বলুন না কেন, বৈঠকে তাঁর দলের নেতা নৌসাদ সিদ্দিকি তার চেয়ে অনেক কম আসনের তালিকাই দিয়েছেন। তার মধ্যে সিপিএমের কাছেই আইএসএফের দাবি বেশি, কংগ্রেসের কাছে অনেক কম। ওই দাবির বিষয়ে দলে আলোচনা করে তাঁরা মত জানাবেন বলে চলে আসেন কংগ্রেসের দুই প্রতিনিধি, বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। গভীর রাত পর্যন্ত বিমানবাবু এবং সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের সঙ্গে আলোচনা চালান নৌসাদ। কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত নিয়ে অপেক্ষা থাকলেও সিপিএম আব্বাসদের সঙ্গে দ্রুত রফায় পৌঁছে যেতে চায় বলেই বাম সূত্রের ইঙ্গিত।

Advertisement

বৈঠক শেষে নৌসাদও বলেছেন, “বামেদের সঙ্গে ৮০% সমঝোতা হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেসের সঙ্গে বৃহস্পতিবার আলোচনা হবে। আমরা তালিকা দিয়েছি, ওঁরা কথা বলে জানাবেন। আমরা জানি ১০০%ই হবে না। কিন্তু ৩০% হলেই বা কী করে হবে! কংগ্রেসের উত্তরের উপরে বাকিটা নির্ভর করছে।”

কংগ্রেসের কাছে দক্ষিণবঙ্গের যে গোটাদশেক আসন আইএসএফ দাবি করেছে, তার মধ্যে মান্নানদের গত বারের জেতা কেন্দ্রও আছে। সেই রকম আসন ছেড়ে দেওয়া সম্ভব নয় বলেই মান্নানেরা নৌসাদদের জানিয়েছেন। মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তর দিনাজপুরেও জায়গা ছাড়তে রাজি নয় অধীরবাবুর দল। ঠিক হয়েছে, আসন ধরে ধরে কংগ্রেসের সঙ্গে আইএসএফের ফের আলোচনা হবে। অন্য দিকে, বিমানবাবুদের কাছে কংগ্রেসের দাবি, তাঁদের ভাগের আসন-সংখ্যা বাড়ানো হোক। তা হলে তাদের ভাগ থেকে কংগ্রেস আইএসএফ-কে জায়গা দিতে পারবে। প্রদীপবাবুর কথায়, ‘‘আমাদের আসন-সংখ্যা বাড়লে তবেই তো আমরা অন্যদের দিতে পারব। পুরো বিষয়টার যুক্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি দরকার।’’

এই বৈঠকের আগে এ দিন নদিয়ার চাপড়ায় কর্মিসভায় গিয়ে আব্বাস বলেছেন, আসন-রফার জন্য আরও দু-এক দিন অপেক্ষা করে তাঁরা ২০ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দেবেন। তেমন হলে একাই লড়বেন তাঁরা। কলকাতায় ২৩ ফেব্রুয়ারি মিছিল করার কথাও বলেছেন তাঁরা। আব্বাসের বক্তব্য, ‘‘যত দিন যাচ্ছে, ততই মনে হচ্ছে, আমাদের বোকা বানানো হচ্ছে! আমাদেরকে ব্যবহার করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কারণ, দীর্ঘ দিন ধরেই অমরা দেখে আসছি যে, আমাদের নানা ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা আর বিষয়টি নিয়ে ঘোলাতে চাইছি না। মানুষ প্রতীক্ষায় আছে। একটা ফয়সালা হওয়া দরকার।’’ তবে তাঁর সংযোজন, ‘‘জোটের পক্ষে আমি। জোট হওয়াটা খুবই প্রয়োজন।’’

জোটের স্বার্থেই সিপিএম অবশ্য তাদের ভাগ থেকে যথাসম্ভব আসনের ব্যবস্থা করতে চাইছে আব্বাসদের জন্য। আবার শরিক আরএসপি-কে এ দিনই আলিমুদ্দিনে ডেকে তারা বলেছে, মুর্শিদাবাদে একটি আসন না হয় সিপিএমই ছেড়ে দেবে। পরিবর্তে আরএসপি তাদের বরানগর আসনটি সিপিএমের জন্য এবং কালচিনি কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে দিক। দলের বৈঠকে আলোচনা করে কাল, শুক্রবার বামফ্রন্টকে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন আরএসপি নেতৃত্ব। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘গত বারের ১৪৮ থেকে আমরা অনেকটাই নামছি। বাকিদেরও অনুরূপ পদক্ষেপ চাই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement