প্রতীকী ছবি।
পরিস্থিতির চমকপ্রদ কোনও পরিবর্তন না হলে পিছিয়ে যেতে পারে সিপিএমের সম্মেলন এবং পার্টি কংগ্রেস।
দুই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার উপরে করোনা আবহ। এই জোড়া সমস্যায় সম্মেলনের প্রক্রিয়া এ বার পিছিয়ে দেওয়ার পথেই হাঁটতে হচ্ছে সিপিএমকে। সে ক্ষেত্রে সম্মেলন-পর্ব নিয়ে যেতে হবে বিধানসভা ভোটের পরে।
দলের ২৩তম পার্টি কংগ্রেস হওয়ার কথা আগামী বছর এপ্রিলে। রাজ্য সম্মেলন মার্চে। তার আগে নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, নিচু তলার সম্মেলন-পর্ব শুরু করতে হবে অক্টোবরে। কিন্তু ২০২১ সালে যে সময়ে দলের পার্টি কংগ্রেস হওয়ার কথা, সেই সময়েই বাংলা ও কেরলে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। এই সমস্যা সামাল দিতে এ বার পুজোর আগে নিচু তলার সম্মেলন সেরে ফেলার ভাবনা ছিল আলিমুদ্দিনের। করোনা সেই পরিকল্পনাতেও জল ঢেলে দিয়েছে। সম্মেলন পিছোলে নেতৃত্ব বা কমিটির বিভিন্ন স্তরে রদবদলের ভাবনাও আপাতত শিকেয়।
দশ বছর আগে একই ভাবে সম্মেলন পিছোতে হয়েছিল সিপিএমকে। বাংলা ও কেরলে ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটের জন্য সম্মেলন এবং পার্টি কংগ্রেস পিছিয়ে গিয়ে ২০১২ সালে হয়েছিল। তার পরে আবার ২০১৫ সালে বিশাখাপত্তনমে পার্টি কংগ্রেসের সময়ে এ রাজ্যে কলকাতা-সহ একগুচ্ছ পুরসভার ভোট ছিল। তার জন্য এ রাজ্যের বেশ কিছু নেতা এবং প্রতিনিধি পার্টি কংগ্রেসে হয় যেতে পারেননি, নয়তো পুরো পার্টি কংগ্রেসে থাকতে পারেননি। সিপিএম সূত্রের খবর, এই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখেই আলিমুদ্দিনের তরফে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বলা হয়েছিল, এ বছর পুজোর আগেই নিচু তলার সম্মেলন সেরে নিতে চায় তারা। কারণ, বছরের শেষ দিকে বিধানসভা ভোটের দামামা বেজে যাবে। ভোট আর সম্মেলন একসঙ্গে দু’টো সামাল দেওয়া কঠিন। করোনাজনিত পরিস্থিতিতে পুজোর আগের পরিকল্পনাও রূপায়ণ করা যায়নি। এখন ভোট-প্রস্তুতির দিকেই বেশি নজর দিতে হচ্ছে দলকে।
দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘দলীয় নানা বৈঠক এর মধ্যে অনলাইন হয়েছে ঠিকই। কিন্তু এক বড় সম্মেলন প্রক্রিয়া ভার্চুয়াল করে ফেলা সম্ভব নয়। এখন আবার সেই সম্মেলন পিছিয়ে দিতে বাধ্য হওয়া ছাড়া পথ নেই!’’ কেরল সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব প্রথমে ভেবেছিলেন, বিধানসভা ভোট ডিসেম্বরের মধ্যে সেরে ফেলার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে সুপারিশ করা হবে। কিন্তু দলীয় আলোচনাতেই সেই ভাবনা খারিজ হয়ে গিয়েছে। তার উপরে রয়েছে কোভিড পরিস্থিতি।
সম্মেলন না হলে কমিটিতে রদবদলের পাশাপাশি নতুন মুখকে নানা স্তরে দায়িত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়াও স্থগিত থাকার সম্ভাবনা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সিপিএম দলীয় স্তরে বার্তা দিয়েছে, করোনা এবং আমপান-এর আবহে ত্রাণ-সহ নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডে যে তরুণ প্রজন্ম এগিয়ে এসেছে, তাদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত করার কাজ এখনই শুরু করতে হবে। আগামী ২৫-২৬ জুলাই রাজ্য কমিটির পরবর্তী বৈঠকে আরও কিছু নির্দেশিকা দেওয়া হতে পারে বলে দলীয় সূত্রের ইঙ্গিত। তরুণ প্রজন্মের দিকেই নজর এখন সীতারাম ইয়েচুরিদের।