অমিত শাহ। —ছবি পিটিআই।
করোনা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত বিপর্যয়ের বাংলায় ক্ষমতা দখলের দামামা বাজানোয় অমিত শাহকে তীব্র আক্রমণ করল বাম ও কংগ্রেস। দুই বিরোধী দলেরই মূল বক্তব্য, তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা অপশাসন, দুর্নীতি বা আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত অভিযোগের জবাব বাংলার মানুষ বুঝে নেবেন ঠিক সময়ে। কিন্তু বিজেপি কী করেছে দেশ জুড়ে, তার জবাব শাহকে আগে দিতে হবে। সিপিএম পাল্টা স্লোগানও তুলেছে— ‘আগে নিজের ঘর সামলা, তার পরে ভাববি বাংলা’!
শাহ যখন শেষ বার বাংলায় সভা করতে এসেছিলেন, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) প্রশ্নে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিল বামেরা। শাহের ‘ভার্চুয়াল সভা’র সময়েও মঙ্গলবার নানা জায়গায় প্ল্যাকার্ড-পোস্টার হাতে দাঁড়িয়েছিলেন বাম ছাত্র-যুবেরা। সিপিএম এবং কংগ্রেস নেতারা এক সুরেই প্রশ্ন তুলেছেন, করোনা মোকাবিলায় রাজ্যকে কতটা সাহায্য শাহের কেন্দ্রীয় সরকার করেছে? পরিযায়ী শ্রমিকেরা কতটুকু সহায়তা পেয়েছেন? লকডাউনে বিপন্ন, গরিব পরিবারগুলির কাছে টাকা পৌঁছেছে? এই সব প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বাংলায় সরকার গড়ার ডাক দেওয়ায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তুলেছেন দুই বিরোধী দলের নেতারা।
সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম এ দিন বলেন, ‘‘নানা প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছুটিয়ে সোনার বাংলা গড়বেন বলেছেন শাহ। স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী ১২ বছর মুখ্যমন্ত্রী থাকার পরেও এমন সোনার গুজরাত গড়েছেন যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প এলে পাঁচিল তুলে দারিদ্র আড়াল করতে হয়! বাংলায় গণতন্ত্র নেই বলেছেন। বাকি দেশে কি গণতন্ত্রের সুগন্ধ ছড়াচ্ছে? বাংলায় আইনশৃঙ্খলা নেই বলেছেন। গুজরাতে গণহত্যা, ভুয়ো সংঘর্ষে হাত পাকিয়ে যাঁরা ক্ষমতায় বসেছেন, তাঁদের কাছে আইনশৃঙ্খলার কথা শুনতে হবে?’’
একই সুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের বক্তব্য, ‘‘দুর্নীতির হিসেব নেবেন বলেছেন শাহ। সারদা মামলা এখনও ঝুলে, নারদ-কাণ্ডে তৃণমূল সাংসদদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের অনুমতি স্পিকার এখনও দেননি, রাজীব কুমারকে নিয়ে আর হইচই নেই— এগুলোর হিসেব দেবেন কি? শাহদের এই গিমিক বাংলার মানুষ ধরে ফেলেছেন!’’ তাঁর আরও সংযোজন, বাংলায় বিজেপি পিছনের দরজা দিয়ে সরকার গড়বে না বলে দাবি করেছেন শাহ। কর্নাটক, মেঘালয়, মণিপুর, গোয়া বা করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই মধ্যপ্রদেশে বিজেপির সরকার গড়া কি সামনের দরজা দিয়ে হয়েছিল?
দু’দলের নেতাদেরই অভিযোগ, অপশাসন বা গণতন্ত্র-হত্যার প্রশ্নে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে একসঙ্গেই তাঁদের লড়াই চলবে।