বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক যুদ্ধে নামতে চলেছে কংগ্রেস। — ফাইল ছবি।
মোদী পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের মামলায় রাহুল গান্ধীকে ২ বছরের সাজা ঘোষণার পরেই তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন করে পথে নামার ঘোষণা করল কংগ্রেস। শুক্রবার লোকসভার ওই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর সাংবাদিক বৈঠকে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি এবং জয়রাম রমেশ একযোগে জানিয়ে দেন, আইনি চৌহদ্দিতে আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করার পাশাপাশি বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াইয়ের তীব্রতা আরও বৃদ্ধি করা হবে। কংগ্রেসের দাবি, সত্যি কথার বলারই ‘শাস্তি’ পেলেন রাহুল।
বৃহস্পতিবারই গুজরাতের সুরত জেলা আদালত রাহুলকে ২ বছর জেলের সাজা শুনিয়েছিল। তারই ভিত্তিতে রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করা হয়েছে বলে লোকসভা সূত্রে খবর। এই সিদ্ধান্তের পরেই সাংবাদিক বৈঠক করে কংগ্রেস। সেই বৈঠকে সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘রাহুল গান্ধী সংসদের ভিতরে ও বাইরে কাউকে ভয় না পেয়ে নিজের মতামত জানিয়েছেন। বোঝাই যাচ্ছে, তারই মূল্য চোকাতে হচ্ছে তাঁকে।’’ সুরতের আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করা হবে বলেও জানিয়েছেন সিঙ্ঘভি। তিনি বলেন, ‘‘আইনের চৌহদ্দিতে থেকে লড়াই করব। আমাদের বিশ্বাস, সাজার উপর স্থগিতাদেশ পাব। জয় আমাদেরই হবে।’’
সিঙ্ঘভি মূলত এই বিষয়ের আইনি দিক নিয়ে মতামত দেন। তবে, জয়রাম সরাসরি আক্রমণ করেন নরেন্দ্র মোদীকে। তাঁর দাবি, রাহুলের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ যে ভাবে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন পেয়েছে তা দেখে ঘাবড়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। জয়রামের কথায়, ‘‘মানুষ ভয় পেলে উল্টোপাল্টা কাজ করে। কারণ তখন মাথার ঠিক থাকে না। রাহুলকে দেখে মোদী ভয় পেয়েছেন। সেই ভয় থেকেই অন্যকে ভয় পাওয়ানোর চেষ্টা করছেন।’’
জয়রামের দাবি, রাহুল ২০১৪ সাল থেকেই মোদী সরকারের মনোভাব এবং নীতির বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন। সেই কফিনে শেষ পেরেকটি হল আদানি কেলেঙ্কারি। একে প্রতিশোধের রাজনীতির প্রকৃষ্ট উদাহরণ হিসাবে উল্লেখ করে জয়রাম বলেন, ‘‘আদানির মহাঘোটালা মানুষের সামনে নিয়ে আসার মাশুল চোকাচ্ছেন রাহুল। এটা শুধু আদানি কেলেঙ্কারি নয়, এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীও ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। আদানির বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য গতকালও জেপিসির দাবি জানিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। আজ তাঁর সাংসদ পদ খারিজ হয়ে গেল। এটাই হল মোদী সরকারের ট্রেডমার্ক ডিজাইন। কিন্তু মোদীজি ভুলে যাবেন না, হুমকি দিয়ে রাহুল গান্ধীকে ভয় পাওয়ানো যায় না। যাঁরা নিজেরা ভয় পান, তাঁরাই অন্যকে ভয় পাওয়ানোর চেষ্টা করেন। মোদী আসলে ভয় পেয়ে গিয়েছেন। তাই মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর আক্রমণ করছেন।’’