Cossipore

Cossipore Incident: এর আগে কোনও দিন এলাকায় দেখা যায়নি, অর্জুনের মৃত্যুতে প্রশ্ন এখন একটি গাড়িকে ঘিরেই

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী শনিবারেই আলিপুরের কমান্ড হাসপাতালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ময়না-তদন্ত হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২২ ০৫:৩০
Share:

ঘটনাস্থলে তদন্তকারীরা। ফাইল চিত্র।

ময়না-তদন্তে কী পাওয়া গিয়েছে তার সামান্যতম ইঙ্গিতও মেলেনি। তবে কাশীপুরে বিজেপি কর্মী অর্জুন চৌরাসিয়ার অপমৃত্যুর ঘটনায় প্রশ্ন ও কৌতূহলের কেন্দ্রে এখন একটি গাড়ি। কাশীপুর রেল আবাসন থেকে অর্জুনের দেহ উদ্ধারের তিন দিনের মাথায় শুক্রবার রাতে অর্থাৎ ঘটনার রাতে এলাকায় ওই গাড়ির উপস্থিতি নিয়ে তাঁর পরিবারের তরফে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে। এই ঘটনার তদন্তে লালবাজারের হোমিসাইড শাখার অ্যাডিশনাল ওসি-র নেতৃত্বে ইতিমধ্যেই একটি স্পেশাল টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

শুক্রবার কাশীপুরের ঘোষবাগান এলাকায় অর্জুনের দেহ উদ্ধারের পর থেকেই তাঁর পরিবার খুনের অভিযোগে সরব। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী শনিবারেই আলিপুরের কমান্ড হাসপাতালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ময়না-তদন্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, প্রায় চার ঘণ্টা ধরে নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ব্যবচ্ছেদের মাধ্যমে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে তদন্ত চালানো হয়। চারটে ভিডিয়ো ক্যামেরার মাধ্যমে ময়না-তদন্তের প্রতিটি ধাপের রেকর্ডিং করা হয়েছে। হাই কোর্টের নির্দেশে ময়না-তদন্তের সময় উপস্থিত ছিলেন আলিপুর আদালতের মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারক, এমসের এক চিকিৎসক এবং কলকাতা পুলিশের এক তদন্তকারী অফিসার। ময়না-তদন্ত কক্ষে যাওয়ার আগে ওই তিন জনেরই মোবাইল ফোন জমা নিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।

কিন্তু আবেদন করা সত্ত্বেও ময়না-তদন্তকারী চিকিৎসকেরা তাঁদের তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টের কোনও আভাস উপস্থিত বিচারক বা পুলিশকর্তাদের দিতে চাননি। কমান্ড হাসপাতাল সূত্রের খবর, কাল, মঙ্গলবার মুখবন্ধ খামে ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এবং পেনড্রাইভের মাধ্যমে ময়না-তদন্তের ভিডিয়ো রেকর্ডিং হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে পেশ করা হবে।

Advertisement

ময়না-তদন্তের পরে দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে শনিবারেই। অর্জুনকে খুন করা হয়েছে বলে রবিবারেও তাঁর পরিবারের তরফে দাবি করা হয়। ঘটনার রাতে একটি হুমকি কানে এসেছিল বলে সংবাদমাধ্যমের সামনে দাবি করেন অর্জুনের মা। মৃতের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ঘটনার দিন দীর্ঘ সময় একটি গাড়িটি এলাকার রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। গাড়ি থেকে এক জনকে নামতেও দেখা গিয়েছিল। মৃতের দাদা বলেন, ‘‘ওই গাড়িকে এর আগে কোনও দিন এলাকায় দেখিনি। ওটা সে-রাতে সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। তার পরে ভোররাতে চলে যায়।’’ এলাকার গাড়ি হলে ভোররাতে চলে যাবে কেন, প্রশ্ন তোলেন তিনি। পরিবারের তরফে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। পুলিশের তদন্তে তাঁদের আস্থা আছে বলেই এ দিন জানান অর্জুনের দাদা।

ওই সন্দেহভাজন গাড়ি সম্পর্কে খোঁজখবর করার পাশাপাশি এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে। ঘটনার দিন বাইরের কেউ সেখানে এসেছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ জানায়, ডেকে পাঠানো সত্ত্বেও মৃতের পরিবারের কেউই রবিবার যাননি। তদন্তকারীরা অবশ্য এ দিনেও যান ঘটনাস্থলে। যায় কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক দলও। ঘটনাস্থল থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। অর্জুনের দেহ যেখান থেকে ঝুলতে দেখা গিয়েছিল, অত উঁচুতে কী ভাবে দড়ি লাগানো হল, সেই
প্রশ্ন তো উঠছেই। এই ধরনের আরও কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা জানান, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার আগে পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে।

রাজ্য পুলিশের কর্তাদের বক্তব্য, সাধারণত ময়না-তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাওয়ার পরে ময়না-তদন্তকারী চিকিৎসকেরা প্রাথমিক ভাবে রিপোর্টের বিষয়ে কিছুটা আভাস দিয়ে থাকেন। তাতে তদন্ত প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে সুবিধা হয়। ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট জানতে পারলে তদন্তকারী অফিসার কিছুটা হলেও তদন্তের ঠিক দিশার দিকে এগোতে পারেন। বিশেষত যদি খুনের ঘটনা হয়, তা হলে খুনের ধরন জানার পরে আততায়ীকে খুঁজতে সুবিধা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement