Coronavirus

অসম বহুদূর, ফারুকের আশ্রয়েই দম্পতি

ফারুক আবদুল্লা নামে ওই যুবকই নিজেদের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন ওই দম্পতিকে। গত এক মাস ধরে ‘অতিথি’দের যত্নের কোনও ত্রুটি রাখেননি তিনি।

Advertisement

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়  

বেলডাঙা শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৪৫
Share:

সেই দম্পতি। নিজস্ব চিত্র

স্বামীর হৃদযন্ত্রে সমস্যা ধরা পড়েছে। বাড়িতে ছোট দুই ছেলেকে রেখেই কলকাতায় তাঁকে ডাক্তার দেখাতে যাবেন বলে রওনা হয়েছিলেন অসমের বাসিন্দা মৌমিতা দাস। কিন্তু কলকাতায় পৌঁছনোর পথেই দেশে লকডাউন শুরু হয়ে যায়। বেলডাঙায় আটকে পড়েছিল ওই দম্পতি। ভিনরাজ্যে কিছুই চেনেন না, জানেন না। অকুল পাথারে পড়েন দু’জন। শেষ পর্যন্ত গ্রামেরই এক বাসিন্দার পরিচিতির সূত্রে বেলডাঙার বাসিন্দা এক যুবকের খোঁজ পান তাঁরা।

Advertisement

ফারুক আবদুল্লা নামে ওই যুবকই নিজেদের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন ওই দম্পতিকে। গত এক মাস ধরে ‘অতিথি’দের যত্নের কোনও ত্রুটি রাখেননি তিনি। তাঁদের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা ছাড়াও মৌমিতার অসুস্থ স্বামী মিঠুনের ওষুধপত্র কিনেও দিয়েছেন তিনি।

অসমের খোরাঘাটের বেরগাঁওয়ে বাড়ি মৌমিতাদের। তিনি মঙ্গলবার বলেন, ‘‘স্বামীর হার্টে সমস্যা আছে। গত মাসে ওঁকে কলকাতায় ডাক্তার দেখাব বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলাম। কিন্তু বেলডাঙায় এসে লকডাউনে আটকে পড়ি। কাউকেই চিনি না। গ্রামে ফোন করে ফারুকদার কথা জানতে পারি। উনি আমাদের ওখানে চুল বিক্রি করতে যান। ফোন নম্বর ছিল না। এক পড়শি জোগাড় করে দিলে ফারুকদার সঙ্গে যোগাযোগ হয়। তারপর থেকে উনি আমাদের জন্য যা করছেন, তা ভোলার নয়। বিদেশ-বিভুঁইয়ে এসে বিপদে পড়েছিলাম। উনি ত্রাতা হয়ে আমাদের বাঁচালেন।’

Advertisement

বেলডাঙার মির্জাপুর মোল্লাপাড়ার বাসিন্দা ফারুক বলেন, “আমি অসমের খোরাঘাট এলাকায় চুল ফেরি করতে যাই। সেই সূত্রে মৌমিতাদিকে দু’-একবার দেখেছি। ওঁদের বিপদ শুনে আমার বাড়িতে নিয়ে এসেছি। এমন দুঃসময়ে সাহায্য না করে পারিনি।’’ ফারুকের কাকিমা আসিয়া বিবি স্থানীয় মির্জাপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। তিনিও ওই দম্পতিকে নানা ভাবে সাহায্য করছেন।

তবে সন্তানদের চিন্তায় রাতের ঘুম চলে গিয়েছে মৌমিতাদের। তাঁদের এই অবস্থার কথা জানতে পেরে মঙ্গলবার ফারুকের বাড়িতে যান বেলডাঙা-১ ব্লকের বিডিও বিরূপাক্ষ মিত্র এবং স্থানীয় থানার পুলিশ। বিডিও পরে বলেন, “সোমবার ওই মহিলা আমায় ফোন করে সাহায্য চেয়েছেন। তিনি দ্রুত বাড়ি ফিরতে চান। কিন্তু অন্য রাজ্যে যাওয়ার ব্যবস্থা লকডাউন চলাকালীন করা সম্ভব নয়। ৩ মে যদি লকডাউন ওঠে একটা ব্যবস্থা করা হবে। ওঁদের হাতে এক সপ্তাহের খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement