শুক্রবার তিনটি বেসরকারি হাসপাতাল-সহ শহরের বাকি জায়গাতেও পৌঁছে যাবে প্রতিষেধকের ডোজ়। পিটিআইয়ের তোলা ফাইল চিত্র।
প্রথম দিনেই একসঙ্গে সব কেন্দ্র থেকে প্রতিষেধক দেবে না রাজ্য সরকার। তাই আগামী ১৬ জানুয়ারি রাজ্যের ৩৫৩টি প্রতিষেধক কেন্দ্রকে প্রাথমিক ভাবে বাছাই করা হলেও, তা কমিয়ে এ বার ২১০টি করা হল। তার মধ্যে শহরের সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল ও আর্বান প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র মিলিয়ে রয়েছে ১৮টি ভ্যাকসিন কেন্দ্র। সেখান থেকেই শুরু হবে বঙ্গে করোনা প্রতিষেধক দেওয়ার কর্মসূচি।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্র সব রাজ্য সরকারকেই টিকাদানের প্রশ্নে তাড়াহুড়ো না করে ধীরে ধীরে প্রতিষেধক কেন্দ্র বাড়াতে বলেছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই দিন দুপুরে নবান্ন থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে কয়েকটি কেন্দ্রে ভ্যাকসিন দেওয়ার কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে থাকবেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। সূত্রের খবর, প্রতিষেধক যাঁরা নেবেন, তাঁদের কয়েক জনের সঙ্গে কথাও বলবেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্য দিকে রাজ্যের সমস্ত ভ্যাকসিন কেন্দ্রেই ওই দিন হাজির থাকবেন সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসক, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা।
আরও পড়ুন: ১০ হাজার ছাড়াল রাজ্যে মোট মৃত্যু, লাগাম সংক্রমণের হারে
আরও পড়ুন: বালুরঘাট-কোচবিহারে পৌঁছল টিকা, পর্যাপ্ত ডোজ না পাওয়ার অভিযোগ উত্তর দিনাজপুরের
প্রতিষেধক কেন্দ্রের সংখ্যা কম করা হচ্ছে কেন? রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘প্রথম দিনেই তাড়াহুড়ো নয়। কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো নয়, ভ্যাকসিন দেওয়ার গুণগত মান বজায় রাখা, পরিকাঠামোর সুবন্দোবস্ত রাখাই আমাদের মূল লক্ষ্য। তাই প্রথম দিনে ২১০টি প্রতিষেধক কেন্দ্রকে বাছাই করা হয়েছে।’’ বেসরকারি হাসপাতালেও প্রতিষেধক কেন্দ্র তৈরির জন্য বুধবার শহরের বেসরকারি হাসপাতালগুলির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শহরের ১৮টি প্রতিষেধক কেন্দ্রের মধ্যে তিনটি বেসরকারি হাসপাতালও রয়েছে। গোটা তালিকায় রয়েছে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ, ন্যাশানাল মেডিক্যাল কলেজ, চিত্তরঞ্জন সেবা সদন, স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন, বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতাল, বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল, এমআর বাঙুর হাসপাতাল এবং বরো ২ এর হাতিবাগানে আর্বান প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ইউপিএইচসি)-১১, বরো ৩ এর সিআইটি রোডের ইউপিএইচসি-৩১, বরো ৭ এর ডিসি দে রোডের ইউপিএইচসি-৫৭, বরো ৯ এর চেতলা সেন্ট্রাল রোডের ইউপিএইচসি-৮২, বরো ১১ এর বোড়াল মেন রোডের ইউপিএইচসি-১১১ এবং তিনটি বেসরকারি হাসপাতাল—ঢাকুরিয়া আমরি, আরএনটেগোর হসপিটাল, অ্যাপোলো।
বিভিন্ন জেলাতেও প্রথম দিনের প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য কয়েকটি কেন্দ্রকে বাছাই করা হয়েছে। পূর্ব ভারতের বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠনের সভাপতি রূপক বড়ুয়া বলেন, ‘‘১৬ জানুয়ারি ঐতিহাসিক দিন। রাজ্যে প্রতিষেধক দেওয়ার প্রথম দিনে সরকারের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমরা গর্বিত। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ভ্যাকসিন কেন্দ্র তৈরি করতে চেয়ে লিখিত আবেদন জমা দিচ্ছে।’’
সূত্রের খবর, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিতরণের পরে বাগবাজারের কেন্দ্রীয় মেডিক্যাল স্টোর্সে শুধু কলকাতার জন্য ৯৩,৫০০ ডোজ় রাখা ছিল। এ দিন সকালে সেখান থেকে কলকাতার ৭টি হাসপাতালে ২০৩১টি ভায়াল (২০,৩১০ ডোজ়) পৌঁছে দেওয়া হয়। বাকিগুলি রাখা হয়েছে বালিগঞ্জে কলকাতা জেলা মেডিক্যাল স্টোর্সে।
আজ, শুক্রবার তিনটি বেসরকারি হাসপাতাল-সহ শহরের বাকি জায়গাতেও পৌঁছে যাবে প্রতিষেধকের ডোজ়। এ দিনই জেলা সদর থেকে জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রতিষেধক যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সকালে বিভিন্ন জেলার কর্তাদের সঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য আধিকারিকদের ভিডিয়ো কনফারেন্সে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল হয়।
আজ, শুক্রবার দূরের কেন্দ্রে এবং কাছের কেন্দ্রগুলিতে শনিবার সকালে পৌঁছবে করোনার প্রতিষেধক। প্রতি জায়গায় ১০০ জন করে ভ্যাকসিন পাবেন।