গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ফের কমল এ রাজ্যে। তবে আগের থেকে একদিনে কোভিড টেস্ট কম হলেও বেড়েছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের দৈনিক হার। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থতার হার বৃদ্ধির পাশাপাশি মৃতের সংখ্যা কমায় খানিকটা হলেও স্বস্তি জুগিয়েছে স্বাস্থ্যকর্তাদের।
সোমবার রাতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে মোট ৪ লক্ষ ৫৯ হাজার ৮১৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪২ লক্ষ ৬ হাজার ৮১৬ জন। ফলে এই মুহূর্তে এ রাজ্যে সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ২৫ হাজার ৩০।
রাজ্যে বিভিন্ন প্রান্তে করোনার সংক্রমণ ঘটলেও তা থেকে সেরে উঠেছেন অনেকেই। ১৭ নভেম্বরের পর থেকে গত কয়েক দৈনিক ৩ হাজার ৬০০-র বেশি রোগী সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। তবে রবিবার সেই প্রবণতায় বদল ঘটে তা নিম্নমুখী হয়। গতকাল সাড়ে ৩ হাজারের বেশি রোগী সুস্থ হয়ে উঠেন। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এদিন কোভিড থেকে পুরোপুরি সেরে উঠেছেন ৩ হাজার ৫৫৭ জন। যা গতকালের থেকে কম।
আরও পড়ুন: করোনা টিকার ১০ কোটি ডোজ জানুয়ারিতে, দাবি পুনাওয়ালার
আরও পড়ুন: মালদহে বার্জ উল্টে পর পর ৮টি লরি পড়ল গঙ্গায়, নিখোঁজ অন্তত ২০
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
একদিনে সুস্থ রোগীর সংখ্যা কমার পাশাপাশি গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিডে মৃতের সংখ্যাও কমেছে। গতকাল ৪৯ জনের মারা গিয়েছিলেন। তবে এদিন সেই সংখ্যাটা কমে হয়েছে ৪৭। স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ৮ হাজার ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
দৈনিক মৃতের সংখ্যা কমার পাশাপাশি আশা জাগাচ্ছে সুস্থতার হারও। আগের দিন তা দাঁড়িয়েছিল ৯২.৭২ শতাংশ। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় ওই হার বেড়ে ৯২.৮০ শতাংশ হয়েছে।
প্রতিদিন যে সংখ্যা কোভিড টেস্ট করা হয় এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত জনের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকেই পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার বলে। এদিনের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্য জুড়ে ৪২ হাজার ৩৬৭টি কোভিড টেস্ট হয়েছে। তার মধ্যে পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে ৩ হাজার ৫৫৭টি। ফলে শতাংশের নিরিখে সংক্রমণের হার বা ‘পজিটিভিটি রেট’ হল ৮.৪০।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
রাজ্যের অন্যান্য জেলার থেকে কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনায় কোভিডে আক্রান্তের দৈনিক সংখ্যা বরাবরই বেশি। এদিন দৈনিক আক্রান্তের নিরিখে কলকাতা শীর্ষে রয়েছে। এ শহরে মোট ৮৪৭ জনের মধ্যে সংক্রমণ ঘটেছে গত ২৪ ঘণ্টায়। ওই একই সময়ে উত্তর ২৪ পরগনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮০৩ জন। এছাড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা (২৬০), নদিয়া (২২৯), হাওড়া (১৭২), হুগলি (১৯৩), দার্জিলিং (১৬১), বাঁকুড়া (১০২), এবং জলপাইগুড়ি (১৩০)-তে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০০ বা তারও বেশি।
স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, উত্তর ২৪ পরগনায় দৈনিক মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ওই জেলায় ১৩ জন মারা গিয়েছেন। অন্যদিকে, কলকাতায় একদিনে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। এছাড়া, নদিয়ায় ৫, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং হাওড়ায় ৩ জন করে কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। মু্র্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান এবং হুগলিতে ২ জন করে রোগী মারা গিয়েছেন। অন্যদিকে, আলিপুরদুয়ার, বীরভূম এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের ১ জন করে সংক্রমিতের মৃত্যু হয়েছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)