গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ফের বাড়ল এ রাজ্যে। একই সঙ্গে বেড়েছে সুস্থতার হারও। পাশাপাশি কমেছে সংক্রমণের হার। বৃহস্পতিবার রাতে করোনা সংক্রমণের পরিসংখ্যান নিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিনে দেখা গিয়েছে এই তথ্য।
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ১৯৭। যা এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি। গত কয়েক দিন ধরেই তিন হাজারের বেশি জনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ছিল। এ দিনও তা অব্যাহত রয়েছে। যার ফলে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৯২২। তবে এঁদের মধ্যে সুস্থও হয়ে উঠেছেন অনেকে। সেই সংখ্যাটা ৯৮ হাজার ৭৮৯। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৩ হাজার ১২৬ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। যদিও ওই সময়ের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৩ জনের। এর ফলে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৩৪।
করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা লক্ষাধিক হলেও সুস্থতার হার বাড়ায় এ রাজ্যে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ২৭ হাজার ৬৯৬। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, শতাংশের নিরিখে তা হল ৭৬.৫১। যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
রাজ্যে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাও আগের থেকে বাড়ানো হয়েছে। এ দিনের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ হাজার ৫৯টি করোনা টেস্ট করানো হয়েছে। তবে তার মধ্যে গত কালের থেকে সংক্রমণের হার কমে হয়েছে ৯.১২ শতাংশ। গত কাল যা ছিল ৯.২২ শতাংশ। প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড টেস্ট করানো হয়েছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আরও পড়ুন: বৃষ্টি-লকডাউনের যুগলবন্দিতে বন্ধের চেহারা রাজ্যে, কলকাতায় গ্রেফতার ৫৪১
আরও পড়ুন: ‘রাজনীতির কাদামাখা কুস্তির আখড়ায় পরিণত হয়েছে শান্তিনিকেতন’, খোলা আবেদনে বিশিষ্টজনেরা
গোটা রাজ্যে প্রথম থেকে করোনা রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি রয়েছে কলকাতায়। এ দিনের বুলেটিনে দেখা গিয়েছে, শহরে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৮৩ জন। এর ফলে কলকাতায় মোট কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪ হাজার ৭১৬-তে। তবে তার মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২৭ হাজার ৩৪৬ জন। ফলে এ শহরে সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ৬ হাজার ২৩৮।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
এ শহরে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ১৩২ জনের। এর মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় ১১ জন মারা গিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে মৃতের সংখ্যার নিরিখে কলকাতার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। ওই জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছেন ১৪ জন। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। পাশাপাশি, পূর্ব মেদিনীপুরে ৫ জন, হাওড়া ও পশ্চিম বর্ধমানে ৩ জন করে, দক্ষিণ দিনাজপুর ও হুগলিতে ২ জন করে এবং দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমানে ১ জন করে কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
কলকাতার পাশাপাশি আশঙ্কা বাড়াচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনা (২৭,৩০৮), হাওড়া (১১,৮৭৭), দক্ষিণ ২৪ পরগনা (৯,৩৪৫), দার্জিলিং (৪,০০৭) মালদহ (৪,১৮০), পূর্ব মেদিনীপুর (৪,৪১৬)-এর কোভিড রোগীর পরিসংখ্যানও।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)