গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দুর্গাপুজোর পর থেকেই রাজ্য জু়ড়ে দ্রুত গতিতে ছ়ড়াচ্ছে করোনার সংক্রমণ। মাত্র ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা হাজারের কাছে পৌঁছেছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি কলকাতায়। এ শহরে আরও ২৭০-এর বেশি বাসিন্দার দেহে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। স্বস্তি দিচ্ছে না দক্ষিণবঙ্গের পরিসংখ্যানও। দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি বা নদিয়ার মতো জেলার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের দার্জিলিঙেও দৈনিক সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। কোভিডে মৃতের সংখ্যা আগের দিনের মতো ফের দু’অঙ্কের ঘরেই রয়েছে। তবে এক দিনে ১২ লক্ষাধিকের টিকাকরণ হয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যায় রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৮৯ জন। শনিবারের বুলেটিনে এই সংখ্যাটি ছিল ৯৭৪। গোটা রাজ্যের মধ্যে কলকাতায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ২৭৩। প্রসঙ্গত, বুধবার থেকে প্রতি দিনই এ শহরের দৈনিক সংক্রমণ ২০০-র গণ্ডি পার করেছে। শনিবার তা আড়াইশোর ঘর ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
উৎসবের মরসুমে করোনাবিধি অগ্রাহ্য করার ফল যে ভুগতে হবে, সেই আশঙ্কা আগেই করেছিলেন চিকিৎসকেরা। দুর্গাপুজোর আগে থেকেই করোনাবিধির তোয়াক্কা না করে শহর এবং শহরতলির দোকান-বাজারে লাগামছা়ড়া ভিড় উপচে প়ড়েছে। পুজোর চার দিনও মণ্ডপে মণ্ডপে মাস্কবিহীনদের জমায়েত দেখা গিয়েছে। এ সব দেখেই পুজোর পর কলকাতা এবং শহরতলিতে সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করেছিলেন চিকিৎসকেরা। সে আশঙ্কা যে অমূলক নয়, তা-ই প্রমাণ করছে রবিবারের করোনার পরিসংখ্যান।
কলকাতার মতোই দক্ষিণবঙ্গে একাধিক জেলায় সংক্রমণ বে়ড়েছে। উত্তর ২৪ পরগনায় আরও ১৪৬ জন আক্রান্ত। হুগলিতে ৮৯, হাওড়ায় ৮৩, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৭৪ এবং নদিয়ায় ৫৪ জনের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এ ছাড়া, রাজ্যের প্রায় প্রতিটি জেলায় কমবেশি সংক্রমণ ছড়িয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের হিসাব অনুযায়ী, রাজ্যে মোট ১৫ লক্ষ ৮৬ হাজার ৪৫৫ জন সংক্রমিত হয়েছেন। তবে এই মুহূর্তে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ৮৮২। সংক্রমণের দৈনিক হারও বে়ড়ে হয়েছে ২.৩২ শতাংশ।
শনিবারের থেকে কম হলেও গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জন কোভিড রোগী মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। তার মধ্যে কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা এবং হুগলিতে ২ জন করে আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। দার্জিলিং এবং নদিয়ায় ১ জন করে রোগী মারা গিয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১৯ হাজার ৫৫ জন করোনার বলি হয়েছেন।