যুবক নিজেই নিজের রিপোর্ট পজ়িটিভ বলে হাসপাতালে ভর্তি হতে এসেছেন দেখে হইচই পড়ে যায় জলপাইগুড়িতে। প্রতীকী ছবি।
কোভিড হাসপাতালের দরজা সব সময় বন্ধই থাকে। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ হঠাৎ সেখানে বাইরে থেকে প্রবল ধাক্কাধাক্কি। সঙ্গে চিৎকার: ‘‘আমি করোনা পজ়িটিভ। দরজা খুলুন প্লিজ। আমাকে ভর্তি নিন।’’ চেঁচামেচিতে চমকে ওঠেন ভিতরে থাকা চিকিৎসক, নার্স, কর্মী, এমনকি রোগীরাও। উঁকি দিয়ে দেখা যায়, এক যুবক দাঁড়িয়ে। পিছনে পড়ে আছে মোটরবাইক।
হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, এক নিরাপত্তাকর্মী গিয়ে বাইকটিকে তুলে দাঁড় করান। ততক্ষণে উত্তেজিত যুবক কিছুটা ধাতস্থ হয়েছেন। তাঁর কাছ থেকে জানা গেল, তিনি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের প্যারামেডিক্যালের ছাত্র। তাঁর কোনও উপসর্গ ছিল না। তাও ২৬ মে নাগরাকাটায় ফিরে শুল্কাপাড়ার এক চিকিৎসকের বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তখন লালারসের নমুনা সংগ্রহ চলছিল। ওই যুবক নিজেই নমুনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন। শুক্রবার দুপুরে রিপোর্টে তিনি খবর পান, তাঁর নমুনা পরীক্ষায় করোনা ধরা পড়েছে। আতঙ্কিত হয়ে আর সময় নষ্ট করতে চাননি তিনি। কখন সরকারি গাড়ি আসবে, সে অপেক্ষাও করেননি। সোজা বাইক নিয়ে রওনা দেন জলপাইগুড়ির বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গনের কোভিড হাসপাতালে। তার পর ৬০ কিলোমিটার উজিয়ে এসে পৌঁছন জলপাইগুড়িতে।
নিয়ম অনুযায়ী সরকারি গাড়িতেই রোগীকে কোভিড হাসপাতালে আনা হয়। যুবক নিজেই নিজের রিপোর্ট পজ়িটিভ বলে হাসপাতালে ভর্তি হতে এসেছেন দেখে হইচই পড়ে যায় জলপাইগুড়িতে। জেলা সদর হাসপাতালের সুপার গয়ারাম নষ্কর বলেন, “উনি আতঙ্কিত হয়ে চলে এসেছিলেন। তার পরে আমরা সরকারি নিয়ম মেনেই ওঁকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি।” জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এর পর থেকে এমন যাতে আর না হয়, তা নিশ্চিত করতে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে নিরাপত্তাকর্মী তাঁর বাইকটি তুলে দিয়েছিলেন, তাঁকেও ওই কোভিড হাসপাতালেই কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: লকডাউন যৌক্তিক, কিন্তু ধাপে ধাপে তোলার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
আরও পড়ুন: বিধি মেনেই দরজা খুলতে চায় অধিকাংশ ধর্মস্থান