স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী চার মাস পরে রাজ্যে মোট করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ৫৫০০। ছবি: পিটিআই।
চারশো থেকে মাত্র ২৯ কম। এক দিনে আক্রান্তের নিরিখে এ-পর্যন্ত সর্বাধিক করোনা পজ়িটিভের হদিস মিলল রবিবার। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন জানাচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে সংক্রমিতের সংখ্যা ৩৭১।
এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা এক সপ্তাহের মধ্যে এই নিয়ে তৃতীয় বার পৌঁছল তিনশোর ঘরে। বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৪৪। শনিবার তা হয় ৩১৭। রাজ্যের করোনা-মানচিত্রে যে-চারটি জেলায় শুরু থেকে এই ভাইরাসের দাপট দেখা গিয়েছে, এ দিনের পজ়িটিভ রোগীদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি সেখানকার বাসিন্দা। ৩৭১ জনের মধ্যে কলকাতা (৭২), উত্তর ২৪ পরগনা (৬০), হাওড়া (৪৭) এবং হুগলিতেই (৪৩) আক্রান্ত ২২২ জন! এই নিয়ে হাওড়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১০২৯। এ ছাড়া সংক্রমণ বেশি কোচবিহার (৩৬), বীরভূম (২৭), নদিয়া (১৮) এবং পূর্ব বর্ধমানে (১৩)।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত আট জনের মৃত্যু হয়েছে বঙ্গে। কো-মর্বিডিটিতে মৃত ৭২ জনকে ধরে এ রাজ্যে মোট করোনা পজ়িটিভ মৃতের সংখ্যা ৩১৭। সেই তালিকায় হাওড়ায় রেলের অর্থোপেডিক হাসপাতালের প্রধান ফার্মাসিস্টের নাম রয়েছে। ইস্টার্ন রেলওয়ে মেনস ইউনিয়ন সূত্রের খবর, সপ্তাহখানেক আগে ওই ফার্মাসিস্টের করোনা পরীক্ষায় প্রথমে ফল নেগেটিভ আসে। ২৬ মে তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি ভর্তি হন সঞ্জীবন হাসপাতালে। শনিবার তাঁর মৃত্যুর পরে করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। এ দিকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ফের এক স্বাস্থ্যকর্মী-সহ চার জনের করোনা ধরা পড়েছে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অ্যানেস্থেশিয়া বিভাগের এক প্রবীণ শিক্ষকের করোনা ধরা পড়েছে। তাঁকে আইডিতে ভর্তি করানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: দাঙ্গাহাঙ্গামা নিয়ে অমিতকে পাল্টা বিঁধলেন অভিষেক
আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত আরও ৮০০০, সতর্ক করলেন মোদীও
স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী চার মাস পরে রাজ্যে মোট করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ৫৫০০। গত সাত দিনে ১৮৩৪ জনের করোনা ধরা পড়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে ট্রেন রাজ্যে ঢোকার পর থেকেই আক্রান্তের সংখ্যায় এই বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছে। এই পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইন্ডিয়ান পাবলিক হেল্থ অ্যাসোসিয়েশন, ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব প্রিভেন্টিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন এবং ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব এপিডেমিয়োলজিস্টের তরফে এ দিন যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যখন দ্রুত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তখন পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজেদের রাজ্যে পাঠানো ঠিক হয়নি। সংক্রমণের মাত্রা যখন কম ছিল, তখন ওঁদের ফেরালে এই পরিস্থিতি তৈরি হত না। এই নীতির ফলে দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ল। ওই সব এলাকায় জনস্বাস্থ্যের পরিকাঠামো দুর্বল। উদ্বেগ প্রকাশ করে কেন্দ্রকে এগারো দফা পরামর্শ দিয়েছে তিনটি জনস্বাস্থ্য সংগঠনের যৌথ মঞ্চ। ‘‘রাজ্য বা কেন্দ্র, অতিমারির মোকাবিলায় কেউ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়নি। ভ্রান্ত নীতির জন্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে,’’ বলেন ইন্ডিয়ান পাবলিক হেল্থ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদিকা সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ।