—ফাইল ছবি
গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড (জিআরএসইএল)-এ কর্মরত কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী (সিআইএসএফ)-র সদস্যদের মধ্যে ব্যাপক হারে কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়ল। সিআইএসএফ সূত্রে খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় জিআরএসইএল-এ তাঁদের ৩৭ জনের শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাস ধরা পড়েছে। সব মিলিয়ে বন্দর এলাকাতে ৩৮ জন সিআইএসএফ জওয়ান এই মুহূর্তে সক্রিয় করোনা আক্রান্ত। তবে প্রত্যেকের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে সিআইএসএফ সূত্রে।
কলকাতা বন্দর, বিমান বন্দর, (জিআরএসইএল), ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এবং ভারতীয় জাদুঘরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে সিআইএশএফ। বন্দর এলাকায় ভূতঘাটের কাছে রয়েছে সিআইএসএফ ব্যারাক। কী ভাবে সংক্রমণ ছড়িয়েছে তা স্পষ্ট না হলেও, প্রাথমিক ভাবে সিআইএসএফ কর্তাদের ধারণা, বাহিনীর ক্যান্টিন থেকে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। কারণ লকডাউনের সময় বাহিনীর সদস্য ছাড়াও বেশ কিছু শ্রমিক সেই ক্যান্টিনে খাওয়াদাওয়া করেছেন।
নয়াদিল্লিতে সিআইএসএফের মুখপাত্র জানিয়েছেন, গোটা দেশে তাঁদের বাহিনীর ১০৯ জন করোনা আক্রান্ত। তার মধ্যে কলকাতায় বর্তমানে আক্রান্ত ৩৯ জন। মুম্বই এবং দিল্লিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯ এবং ৩২। কলকাতাতেই আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। কলকাতা বন্দর সূত্রে খবর, ডক চত্বরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা জওয়ানদের মধ্যে ৩ জনের সংক্রমণ হয়েছিল। তাঁদের দু’জন সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। ১ জন চিকিৎসাধীন। গত তিন দিনে দুই সিআইএসএফ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে করোনায় আক্রান্ত হয়ে। ফলে সিআইএসএফ বাহিনীর এই সংক্রমণ চিন্তা বাড়িয়েছে কর্তাদের। আক্রান্তদের গোটা ইউনিটকেই কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। গোটা ইউনিটেরই কোভিড পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কর্তাদের আশঙ্কা, সংক্রমণ ছড়াতে পারে আরও জওয়ানদের মধ্যে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর গোটা ব্যারাক কনটেনমেন্ট জোন হিসাবে চিহ্নিত করেছে।
আরও পড়ুন: আধাসামরিক বাহিনীর ক্যান্টিনে এ বার বিকোবে শুধু দেশীয় পণ্য, ঘোষণা অমিতের
কলকাতার অন্যত্র যে সিআইএসএফ ইউনিট রয়েছে, সেখানে নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে ক্যান্টিনে যাতে বাইরের কেউ যাতায়াত না করতে পারেন সে বিষযে সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। এর আগে বিএসএফের ১০ জওয়ান আক্রান্ত হয়েছিলেন করোনায়। জানা গিয়েছে, এক জন আক্রান্ত করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসা কেন্দ্রীয় দলের সঙ্গে ছিলেন। তিনিই বাহক হিসাবে কাজ করেছেন এবং সংক্রমণ ছড়ায় ১০ জনের মধ্যে। বিএসএফের ওই ইউনিটেরও ৫০ জন সদস্যকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। ক্যান্টিন থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভবনা তৈরি হওয়ায় কলকাতায় অন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যারাকেও বহিরাগতদের ক্ষেত্রে আরও কড়াকড়ি করা হয়েছে। নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা শুরু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যে রেড জোনের তিন ভাগ, ছাড়ে মেয়াদি পরিকল্পনা
অন্য দিকে, কলকাতা পুলিশেরও আরও সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। লালবাজার সূত্রে খবর, মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের এক অফিসার। বুধবার তিলজলা থানার এক সাব ইনস্পেক্টর এবং আরজি কর হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এক সদস্যের কোভিড পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। দু’জনেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সশস্ত্র বাহিনীর পাশাপাশি বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের এক নার্স এবং দুই সাফাইকর্মী আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। নার্সের বাড়ি খিদিরপুর এলাকায়। আক্রান্তের তালিকায় রয়েছেন মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক এবং এক ব্যঙ্ককর্মী। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের প্রমথেশ বড়ুয়া সরণির শাখা সিল করে কনটেনমেন্ট জোন হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।