ছবি: পিটিআই।
পুরুলিয়ার পুলিশের বাধায় ঝাড়খণ্ডে ফেরত যাওয়া দশ শ্রমিকের ঠাঁই হল মুরির পুনর্বাসন কেন্দ্রে। শুক্রবার ঝাড়খণ্ডের রাঁচীর ডিএসপি (সিলি) চন্দ্রশেখর আজাদ বলেন, ‘‘আমরা খবর পেয়ে সন্ধ্যায় ওই দশ শ্রমিককে উদ্ধার করি। তাঁদের মুরির একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার উপরে
নজর রয়েছে।’’
রাঁচীতে নির্মাণকাজে গিয়ে ‘লকডাউন’-এ আটকে পড়েন দশ পরিযায়ী শ্রমিক। অভিযোগ, এলাকা ছাড়ার জন্য সেখানকার লোকজন ‘চাপ’ দিচ্ছিলেন। প্রায় ৮০ কিলোমিটার হেঁটে পুরুলিয়ার সীমানা পর্যন্ত চলে আসেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার ভোরে তুলিনের কাছে সুবর্ণরেখা পার করে ঝালদায় ঢুকে একটি জঙ্গলে আশ্রয় নেন। ওই শ্রমিকদের তিন জন পুরুলিয়ার নিতুড়িয়ার। চার জন মুর্শিদাবাদের। তিন জন ঝাড়খণ্ডের বোকারোর, রাঁচী থেকে পুরুলিয়া হয়ে গেলে তাঁদের বাড়ির পথ কম হয়।
খাবার ফুরিয়ে গিয়েছে শুনে স্থানীয় কিছু লোকজন ওই শ্রমিকদের মুড়ি খেতে দেন। পরে পুলিশ গিয়ে দশ জনকে ঝাড়খণ্ডে ফেরত পাঠায়। সন্ধ্যায় বিষয়টি পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদারের কানে ওঠে। তিনি ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সূত্রের খবর, অনেক পথ হেঁটে আসা ওই শ্রমিকদের কেন কোনও খাবার না দিয়ে তড়িঘড়ি ঝাড়খণ্ডের দিকে ‘ঠেলে’ দেওয়া হল, তা নিয়ে জেলাশাসকের প্রশ্নের মুখে পড়ে ব্লক প্রশাসন।
সন্ধ্যা থেকেই ঝাড়খণ্ডে ফেরানো শ্রমিকদের খোঁজ শুরু করে দেয় ঝালদা ১ ব্লক প্রশাসন ও পুলিশ। বিডিও (ঝালদা ১) রাজকুমার বিশ্বাস জানান, মুরির পুনর্বাসন কেন্দ্রে তাঁরা উঠেছেন শোনার পরেই সেখানে খাদ্যপণ্য পাঠানোর কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু সিলির প্রশাসন শ্রমিকদের সব রকমের সাহায্য করার আশ্বাস দেয়।
শুক্রবার পুরুলিয়ার জেলাশাসক বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে যে যেখানে আছেন, সেখানেই থাকতে হবে। তবে কেউ যদি ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর থাকেন, সেটাও আমাদের দেখা দরকার। প্রশাসনকে এ ব্যাপারে মানবিক হতেই হবে।’’ ফোনে শ্রমিকেরা বলেন, ‘‘পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকাখাওয়ার সমস্যা নেই। তবে হাতে টাকা-পয়সা ফুরিয়ে গিয়েছে। পরিবারকে কিছু পাঠাতে পারছি না, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছি।’’