মাস্ক কেনার হিড়িক। শনিবার বড়বাজারে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
করোনায় সতর্ক রাজ্য। শুরু হয়েছে বিশেষ নজরদারি। মাস্কের কালোবাজারি রুখতে হচ্ছে অভিযানও।
বিদেশ থেকে প্রতিদিন যে সব যাত্রী বিমানবন্দর হয়ে কলকাতা শহরে ঢুকছেন এবং থাকছেন, তাঁদের উপরে এখন থেকে নজর রাখবে কলকাতা পুরসভা। শুক্রবার নবান্নে করোনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের পরে শনিবার কলকাতা পুরসভাও এই সংক্রান্ত বৈঠক করেছে। সেখানে ছিলেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, পুর কমিশনার খলিল আহমেদ-সহ পুরকর্তারা।
পুরসভা সূত্রের খবর, দিনে ৩৫টি আন্তর্জাতিক বিমান দমদমে নামে। সব মিলিয়ে যাত্রী সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার। এঁদের মধ্যে দেশের নাগরিক এবং বিদেশিরাও রয়েছেন। এই সব বিমানযাত্রীদের ৪০ শতাংশ যাত্রী কলকাতা শহরে এবং বাকি ৬০ শতাংশ রাজ্যের অন্য কোথাও যান। সেই হিসেবে দিনে ১,৪০০জন কলকাতায় থাকছেন। এখন থেকে পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসকেরা তাঁদের উপরে নজর রাখবেন। প্রতিদিন তাঁদের শরীর কেমন আছে, তা জানবেন পুরকর্তারা। মোট ২৮ দিন এই নজরদারি চলবে।
স্বাস্থ্য দফতরকে বিদেশ থেকে আগত বিমানযাত্রীদের পূর্ণ তালিকা দেবেন বিমানবন্দর কতৃর্পক্ষ। তার ভিত্তিতে যাঁরা কলকাতায় ঢুকছেন এবং থাকছেন, সেই তালিকা পুরসভাকে দেবে স্বাস্থ্য দফতর। পুরসভা স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিক অমিতাভ চক্রবর্তীকে এই সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বধূ নির্যাতন তদন্তে ‘উপরি’ পুলিশের
করোনাভাইরাস সংক্রমণের আগাম সতর্কতায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতেও পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। জেলায় জেলায় তৈরি হয়েছে ‘ক্যুইক রেসপন্স টিম’। করোনার প্রকোপ ছড়িয়েছে এমন দেশ থেকে জেলায় ফেরা অনেককেই নজরবন্দি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। মুর্শিদাবাদে যেমন মোট ২১ জন বিভিন্ন দেশ থেকে জেলায় ফিরেছেন। তাঁদের উপর ২৮ দিন নজরদারি চালানো হবে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রথম ১৪ দিন তাঁদের আলাদা ঘরে থাকতে হবে। ওই ক’দিন লোকজনের সঙ্গে মেলামেশায় নিষেধ রয়েছে।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরেও নতুন করে আরও ১১ জনের উপরে নজরদারি চালানোর নির্দেশ এসেছে। তাঁদেরও আপাতত সপ্তাহ দুয়েক ‘ঘরবন্দি’ থাকতে হবে। এঁদের কেউ চিন, কেউ তাইল্যান্ড, কেউ সিঙ্গাপুর থেকে সম্প্রতি জেলায় ফিরেছেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘রাজ্যের নির্দেশে আগেও কয়েক জনের উপরে নজরদারি চলেছে। এখনও কয়েক জনের উপরে নজরদারি চলছে।’’ প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ১৭জন।
মাস্ক নিয়ে কালোবাজারি রুখতে এ দিন কলকাতার এজরা স্ট্রিট ও বাগড়ি মার্কেটে হানা দেয় কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখা। মাস্কের সরবরাহ কম রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের দাবি। মাস্ক ও ওষুধের দাম যাতে না বাড়ে সে দিকে কড়া নজর রাখার কথা শুক্রবারই বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনও জানিয়েছেন, মাস্কের দাম বাড়ানো হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।