Coronavirus

কেন্দ্র যন্ত্র নিয়ে রাজ্যের পাশেই: নাইসেড-প্রধান

নাইসেডের ডিরেক্টর জানান, কেন্দ্র এই সব ল্যাবরেটরির পরিকাঠামো গড়েছে বলেই সঙ্কটকালে সেগুলি করোনার নমুনা পরীক্ষার উপযুক্ত হয়ে উঠেছে।

Advertisement

সৌরভ দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২০ ০৪:৫৮
Share:

ফাইল চিত্র।

করোনা সংক্রমণ ঘটেছে কি না, তা জানতে সন্দেহভাজনের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য চেয়েও প্রয়োজনীয় কিট মিলছে না বলে অভিযোগ রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের। স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের বক্তব্য, সেই জন্যই স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে দ্রুত নমুনা পরীক্ষা শুরু করা যায়নি। এই প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে অসহযোগিতার অভিযোগ ঠিক নয় বলে বৃহস্পতিবার জানান আইসিএমআর-নাইসেডের (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এন্টেরিক ডিজ়িজ়) ডিরেক্টর শান্তা দত্ত।

Advertisement

কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থার আঞ্চলিক কেন্দ্রের অধিকর্ত্রী শান্তাদেবী বলেন, ‘‘কেন্দ্র কিছু করছে না, তা কিন্তু নয়। রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে যে-সব পরীক্ষা কেন্দ্র গড়ে উঠেছে, তার পরিকাঠামো উন্নত করেছে ডিপার্টমেন্ট অব হেল্‌থ রিসার্চ (ডিএইচআর)। লোকবল, যন্ত্র ইত্যাদি দিয়ে রাজ্যের পাশে দাঁড়িয়েছে কেন্দ্র।’’ একের পর এক সংক্রামক রোগের দাপটের নিরিখে কয়েক বছর আগে বিভিন্ন রাজ্যে আধুনিক ভাইরোলজি ল্যাবরেটরি তৈরির পরিকল্পনা করেছিল কেন্দ্র। সেই অনুযায়ী ডিএইচআরের তত্ত্বাবধানে রাজ্যগুলির মেডিক্যাল কলেজে ‘ভাইরাস রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবেটরিজ়’ বা ভিআরডিএল গড়ার সিদ্ধান্ত হয়। রাজ্যের এসএসকেএম, আরজি কর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, মেদিনীপুর এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভিআরডিএল গড়া হয়েছে।

নাইসেডের ডিরেক্টর জানান, কেন্দ্র এই সব ল্যাবরেটরির পরিকাঠামো গড়েছে বলেই সঙ্কটকালে সেগুলি করোনার নমুনা পরীক্ষার উপযুক্ত হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ, মালদহ মেডিক্যালে তো রিয়েল টাইম পিসিআর ছিল না। গত সপ্তাহে সেই যন্ত্রের ব্যবস্থা হয়েছে। গবেষণাগারে ভাইরোলজিস্টের ব্যবস্থাও করেছে কেন্দ্র। এসএসকেএম এবং চারটি নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্রে ১০০টি ভাইরাল ট্রান্সপোর্ট মিডিয়াম দেওয়া হয়েছে।’’ কিট নিয়ে অসহযোগিতা করা হয়নি বলেই দাবি শান্তাদেবীর। তিনি জানান, কোনও সন্দেহভাজনের লালারসের নমুনা পজ়িটিভ কি না, তা জানতে হলে তিনটি পরীক্ষা করতে হয়। প্রথমে হয় ‘স্ক্রিনিং’। সেখানে ভাইরাসের অস্তিত্বের আভাস মিললে আরও দু’টি ‘জিন কনফারমেশন’ পরীক্ষা হয়। এই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে যে-কিট লাগে, প্রতিটির দাম সাড়ে চার-পাঁচ হাজার টাকা। নাইসেড, এসএসকেএম, মেদিনীপুর, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ, ট্রপিক্যাল— এদের প্রত্যককেই প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার এক হাজার কিট দেওয়া হয়েছে বলে জানান শান্তাদেবী। স্বাস্থ্য ভবনের অনুরোধে ৫০টি ভাইরাল ট্রান্সপোর্ট মিডিয়াম দেওয়া হয়েছে ট্রপিক্যালকে।

Advertisement

‘‘এক হাজার কিট যথেষ্ট, তা বলছি না। কিন্তু সাধ্যমতো সাহায্য করা হয়েছে। জার্মানি থেকে কিট আমদানি করায় কিছু সমস্যা ছিল। সম্প্রতি দু’টি দেশীয় সংস্থাকে এই কিট তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ওই সব সংস্থা কিট সরবরাহ করলে চাহিদা অনুযায়ী জোগান দেওয়া যাবে,’’ বলেন অধিকর্ত্রী। তিনি জানান, নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে আক্রান্তের হদিস দেওয়ার পাশাপাশি কমিউনিটি স্তরে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে কি না, সেই পরীক্ষানিরীক্ষাও করছে নাইসেড। বিদেশ-যোগ থাকলে বা আক্রান্তের সংস্পর্শে না-এলেও ‘সিভিয়র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন’-এ ভোগা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা করা হয়েছে এই ধরনের ১৩০টি নমুনা। আবেদনের ভিত্তিতে অ্যাপোলোকে করোনা-পরীক্ষার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের আবেদনও বিবেচনা

করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement