ছবি পিটিআই।
দলবদলের গুঞ্জন ফের খারিজ করে দিলেন মুকুল রায়। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বিজেপি যে ভাবে রাজ্য সরকারকে বিঁধছে, সেই সুর শোনা গেল না তাঁর গলায়। বীরভূমের সিউড়িতে সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর তৃণমূলে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে মুকুল বলেন, ‘‘মিথ্যা কথা। আমি একটা জায়গায় আছি। কিছু লোক এই অপপ্রচার করে দলের কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।’’ আবার একই সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমাদের রাজ্যে মৃত্যুর হার যাই হোক, এখন যে জায়গায় দাঁড়িয়েছে, তাতে মৃত্যুর হার কমছে এবং সুস্থ হওয়ার হার বাড়ছে। এ রাজ্যে ৪০ শতাংশ রোগী সুস্থ হচ্ছেন।’’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের বক্তব্য়, একটি গেলাস যদি অর্ধেক খালি থাকে, তার মানে তা অর্ধেক ভর্তি। সরকারপক্ষ সব সময় চেষ্টা করে গেলাসটি অর্ধেক ভর্তি— সে দিকে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে। অন্য় দিকে, বিরোধী পক্ষের চেষ্টা থাকে গেলাসটি যে অর্ধেক খালি— কেবল সেটাই জনসমক্ষে তুলে ধরার। মুকুল এ দিন যে ভাবে রাজ্য়ের করোনা রোগীদের সুস্থ হওয়ার হার দেখিয়েছেন, তাতে তাঁর কথা থেকে রাজ্য়ের করোনা-পরিস্থিতি সম্পর্কে ঈষৎ ইতিবাচক ছবি উঠে আসছে। অনেকটা সরকারের গেলাস অর্ধেক ভর্তি দেখানোর মতো। অথচ, বিজেপির রাজ্য় সভাপতি দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে দলের অন্য়ান্য় নেতা সর্বদাই বিপরীত ছবি দেখানোর চেষ্টা করেন। এখান থেকেই মুকুলের তৃণমূল সরকার সম্পর্কে ‘নরম’ ভাষা প্রয়োগ নিয়ে সূদূরপ্রসারী জল্পনা জিইয়ে রাখছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কেউ কেউ।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহের শেষ দিকে কয়েক দিন দিল্লিতে কাটিয়ে মুকুল ফের কলকাতায় ফিরেছেন। তার পর শনিবার থেকে রাজ্য় রাজনীতিতে গুঞ্জন— কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছ থেকে মন্ত্রিত্ব বা দলে স্বাধীন ভাবে কাজ করার সুযোগ— কোনও বিষয়েই আশ্বাস না পেয়ে ক্ষুব্ধ মুকুল। সে কথা বিজেপির মধ্যে কাউকে কাউকে জানিয়েছেন তিনি। এমনকি, যোগাযোগ শুরু করেছেন তৃণমূলের সঙ্গেও। যদিও মুকুল শনিবারেই ওই গুঞ্জন ‘মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। তৃণমূলও জানিয়েছিল, মুকুলের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ সংক্রান্ত প্রচারটি ঠিক নয়। কিন্তু এ দিন ফের মুকুল রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে ‘কড়া’ ভাষা প্রয়োগ না করায় তাঁকে নিয়ে ওই জল্পনার সুযোগ থেকে গেল বলে অনেকে মনে করছেন।
আরও পড়ুন: ‘আমার প্লাজ়মায় যদি প্রাণ বাঁচে...’
তিনি কি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হচ্ছেন? এ নিয়েও মুকুল এ দিন ফের বলেন, ‘‘ওটা বাজে খবর, ফালতু খবর। তোমাদের কাছে খবর আছে। আমার কাছে খবর নেই। বিজেপিতে এই ভাবে হয় না।’’ বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়েই কি তাঁর এ দিনের সিউড়ি সফর? মুকুলের জবাব, ‘‘আর ন’মাস বাদে বিধানসভা নির্বাচন। তাই অন্য় সব কিছুর সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি তো করতেই হবে।’’
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কালকের করোনা-বৈঠকে বলার ডাক পেল না বাংলা