তপন-হত্যার জন্য পুলিশ এবং শাসক দলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে কংগ্রেস। অভিযোগ মানেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন বলেন, “অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ দাখিল করা হলে, পদক্ষেপ করা হবে।”
অধীর চৌধুরীর সামনে কেঁদে চলেছেন তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু। —নিজস্ব চিত্র।
আততায়ীদের গুলিতে নিহত পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভার সদ্য নির্বাচিত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর শেষযাত্রাতেও হল অশান্তি। পুলিশ সূত্রের দাবি, সোমবার শেষযাত্রার মিছিল থেকে পুলিশকর্মীদের তাক করে ইট ছোড়া হয়। জনতার অভিযোগ, বিনা প্ররোচনায় লাঠি চালায় পুলিশ। পুলিশ অভিযোগ মানেনি। তবে তপন-হত্যার জন্য পুলিশ এবং শাসক দলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে কংগ্রেস। অভিযোগ মানেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন বলেন, “অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ দাখিল করা হলে, পদক্ষেপ করা হবে।”
অভিযোগ, কাছ থেকে গুলি করে রবিবার বিকেলে অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীরা খুন করে তপনকে (৪৯)। সোমবার সকাল থেকেই ঝালদা শহর ছিল থমথমে। দুপুর নাগাদ নিহত কাউন্সিলরের বাড়ি যান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। তাঁর অভিযোগ, “এটা মার্ডার ফর মেজরিটি (সংখ্যাগরিষ্ঠতা)। পুর-বোর্ডে মেজরিটি পাওয়ার জন্যই মার্ডার। ঝালদা পুরসভা দখলের উদ্দেশ্যে তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা পুলিশের সহায়তায় এই খুন করেছে। এই খুনে স্থানীয় পুলিশ অফিসার জড়িত।” অভিযোগ প্রসঙ্গে আইসি (ঝালদা) সঞ্জীব ঘোষ মন্তব্য করেননি। অধীরের সংযোজন: “আমরা আদালতে যাব। শুধু সিবিআই-তদন্ত হলেই হবে না। কোর্টের নজরদারিতে সিবিআই-তদন্ত চাইব।” এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপালও টুইট করে ঘটনার জন্য তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, “পুলিশ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিক।”
সূত্রের খবর, ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত নিহত তপনের দাদা নরেন কান্দু ও ভাইপো দীপক কান্দু (২ নম্বর ওয়ার্ডে তপনের বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন তিনি)-সহ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে্। পুলিশ সুপারের দাবি, “তদন্ত ঠিক পথেই এগোচ্ছে।”
রাঁচীর হাসপাতালে ময়না-তদন্ত শেষে, এ দিন বিকেল সওয়া ৪টে নাগাদ তপনের দেহ এসে পৌঁছয় ঝালদায়। দেহ বাড়িতে আসতেই ওঠে কান্নার রোল। সঙ্গে পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া শুরু হয়। শেষযাত্রার মিছিল ঝালদার পুরনো থানার সামনে পৌঁছতেই ঝামেলা বাধে। পুলিশকর্মীদের উপরে ইট ছোড়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে তেতে ওঠে এলাকা। জনতার পাল্টা দাবি, পুলিশের লাঠিতে দু’জনের মাথা ফাটে। পরে, জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। নির্বিঘ্নে মেটে শেষকৃত্য। নিহতের স্ত্রী পূর্ণিমা বলেন, “ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে এমন কয়েক জনের নাম পুলিশকে জানিয়েছি। বিচার চাই।’’