গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ফের চিঠি পাঠালেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী। এ বার তাঁর দাবি, বিতর্কিত তিন কৃষি আইনের মতোই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বাতিল করুক নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সংসদের আসন্ন বাদল অধিবেশনেই ‘ভারতীয় সংবিধানের মৌলিক নীতি এবং ভাবধারার পরিপন্থী’ সিএএ বাতিলের জন্য শাহের কাছে দাবি জানিয়েছেন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ।
ধর্মের কারণে পাকিস্তানে পদে পদে নির্যাতিত হওয়ারা ভারতে এসে হেনস্থার মুখে পড়ছেন বলে অভিযোগ জানিয়ে মঙ্গলবার শাহকে একটি চিঠি লিখেছিলেন অধীর। তাতে তিনি লেখেন, ‘সংসদে পাশ হওয়া আইনে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, পার্সি, জৈন এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা নাগরিকত্ব নিয়ে এ দেশে আসতে পারেন। কিন্তু ওই প্রক্রিয়া এতটাই ধীর লয়ে চলছে যে, বিড়ম্বনার মুখে পড়ে পাকিস্তানে ফিরে গিয়েছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। অধীরের দাবি, সব চেয়ে খারাপ বিষয় হল, এই মানুষগুলো পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার পর সে দেশের এজেন্সির মাধ্যমে ভারতের বদনাম করা হচ্ছে।’
শাহকে পাঠানো অধীরের চিঠি।
অধীর ওই চিঠিতে পরোক্ষে বিতর্কিত সিএএ কার্যকরের দাবিই তুলেছেন কি না, সে প্রশ্ন উঠেছিল। রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা স্পর্শকাতর ওই বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দ্বিতীয় চিঠিটি পাঠিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবারের চিঠির প্রসঙ্গ তুলে শাহকে অধীর লিখেছেন, ‘গতকাল আমি ভারতে ফিরে আসা পাকিস্তানি হিন্দুদের করুণ অবস্থার প্রতি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম। ধর্মীয় নিপীড়ন থেকে বাঁচতে ভারতে আসা বিপুল সংখ্যক পাকিস্তানি হিন্দুকে সে দেশে ফিরে যেতে হয়েছিল কারণ তারা ভারতীয় নাগরিকত্ব পাননি। ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী বা জাতীয়তা নির্বিশেষে আমরা সব সময়ই প্রান্তিক ও অবহেলিত মানুষের জন্য আমাদের আওয়াজ তুলেছি।’
সংসদে পাশ হলেও সিএএ কার্যকর কার্যত অসম্ভব জানিয়ে ওই চিঠিতে অধীরের মন্তব্য, ‘দু’বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে, আপনি সিএএ নামক অসুস্থ চিন্তাসম্পন্ন আইন পাশ করেছেন। তবুও, আপনি এর অন্তর্নিহিত এবং প্রকাশ্য অসাংবিধানিকতার কারণে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হননি। সে কারণেই পাকিস্তানি হিন্দু প্রত্যাবর্তনকারীরা আশাহত হয়ে সে দেশে ফিরে যাচ্ছে। এই কঠোর আইনটি কার্যকর করা যায় না, কারণ এটি একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে নিশানা করেই তৈরি।’