প্রতীকী ছবি
ক্ষতিপূরণের দাবি নিয়ে ক’দিন ধরেই উত্তেজনা ছড়াচ্ছিল গ্রামে। এ বার সংঘর্ষ বাধল তৃণমূল-বিজেপির।
শুক্রবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি ১ ব্লকের ন্যাজাট থানার কানমারি গ্রামের ঘটনা। তৃণমূলের সঙ্গে বোমা-বন্দুক নিয়ে সংঘর্ষ বাধে বিজেপির। ১৬ জন জখম হয়েছেন। কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর চলেছে। এক মহিলা সহ ৬ জনকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার সকালেও দু’পক্ষের হাতাহাতি শুরু হয়। তবে পুলিশ দ্রুত গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাটগাছি পঞ্চায়েতের কানমারি গ্রামের পাশেই ভাঙিপাড়া। বছরখানেক আগে ওই গ্রামেই তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে উভয়পক্ষের তিন জনের মৃত্যু হয়েছিল। বিজেপির এক নেতা এখনও নিখোঁজ। আমপানে ক্ষতিপূরণের অভিযোগকে সামনে রেখে ফের দু’পক্ষের ঝামেলা বাধল।
তৃণমূল উপপ্রধানের কারসাজিতে আমপানে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তেরা টাকা পাননি বলে অভিযোগ বিজেপির। তৃণমূল ঘনিষ্ঠ, যাঁদের বাড়িঘরের ক্ষতি হয়নি, তাঁরাও টাকা পেয়ে গিয়েছেন বলে দাবি পদ্মশিবিরের। দিন তিনেক আগে বিডিওর কাছে ক্ষতিগ্রস্তদের পৃথক তালিকা জমা দেয় তারা।
বিজেপির মণ্ডল সভাপতি সঞ্জয় পাল অবশ্য বলেন, ‘‘বারোশো জনের তালিকা জমা দেওয়ায় ওদের গায়ে জ্বালা ধরেছে। শুক্রবার উপপ্রধান সুশীল খরবিনের নেতৃত্বে একদল বহিরাগত গ্রামে ঢুকে আমাদের উপরে হামলা চালায়। গুলিও ছোড়ে।’’
হাটগাছি পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান সুশীল অবশ্য বলেন, ‘‘শুক্রবার সন্ধে সাড়ে ৭টা নাগাদ আমরা দু’জন বাড়ি ফিরছিলাম। সে সময়ে বহিরাগতদের নিয়ে গ্রামে বিজেপি গোপন বৈঠক করছিল। আমাদের ধরে মারধর করে। বন্দুক নিয়ে তাড়া করলে কোনও রকমে একটা ঘরে ঢুকে নিজেকে রক্ষা করি। তা জানতে পেরে গ্রামের মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তুললে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা পালায়।’’ ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি বা স্বজনপোষণের অভিযোগ মানেননি তিনি।
সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতোরও দাবি, হাটগাছি এলাকার ১৫টি বুথে আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত হাজার তিনেক মানুষের নামের তালিকা তৈরি করা হয়। যদি নাম ভুল হয়ে থাকে, সে জন্য দ্বিতীয় তালিকাও করা হচ্ছে। সন্দেশখালি ১-এর বিডিও সুপ্রতিম আচার্য বলেন, ‘‘ঘর ভাঙার টাকা নিয়ে কারও কোনও অভিযোগ থাকলে বা তালিকায় নাম তুলতে চাইলে ডাকযোগে জানাতে হবে। আমরা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।’’
শনিবার সন্ধ্যায় বসিরহাটে আসেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। চিকিৎসাধীন বিজেপি কর্মীদের দেখতে যান বসিরহাট সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে।