ছবি: পিটিআই।
মেঘ সরতেই ফের শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়ল গাঙ্গেয় বঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। কলকাতাতে হাড়কাঁপানো শীতের অনুভূতি মিলেছে। উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলাতে জাঁকিয়ে শীত পড়েছে বলে হাওয়া অফিসের খবর। নয়া দিল্লির মৌসম ভবন জানাচ্ছে, উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারতেও তীব্র শীত চলছে। আজ, রবিবারেও কলকাতা-সহ রাজ্যে শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা রয়েছে। বহু এলাকায় দিনের তাপমাত্রা সে ভাবে বাড়বে না। ফলে শীতল দিনও অনুভূত হতে পারে।
আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি কম। এটাই এই মরসুমের শীতলতম দিন। তবে, আজ রবিবার সেই রেকর্ড ভাঙতে পারে বলেও কেউ কেউ মনে করছেন। ব্যারাকপুরে আরও কিছুটা নেমে রাতের তাপমাত্রা থিতু হয়েছে ১০ ডিগ্রিতে। পুরুলিয়ায় রাতের তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। পশ্চিমের বাকি জেলাগুলিতেও রাতের তাপমাত্রা ৭-৮ ডিগ্রির কাছে পিঠে ঘোরাফেরা করছে। উত্তরবঙ্গে শিলিগুড়িতে এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তরাই-ডুয়ার্সেও রাতের তাপমাত্রা ৮-৯ ডিগ্রির কাছাকাছি রয়েছে।
কলকাতার কেউ কেউ অবশ্য বলছেন, শনিবার তাপমাত্রা আরও কম ছিল। অনেকেরই মোবাইল অ্যাপে সকালে তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস দেখিয়েছে। তবে আবহবিদদের একাংশের দাবি, ওই অ্যাপে সম্ভবত অনুভূত ঠান্ডা দেখিয়েছে। প্রবল শীতে অনেক সময় বাস্তব তাপমাত্রার থেকে ঠান্ডা বেশি অনুভূত হয়। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলছেন, পশ্চিমী ঝঞ্ঝা কেটে গিয়েছে। উত্তর ভারত থেকে কনকনে ঠান্ডা বাতাস বাধাহীন ভাবে রাজ্যে আসছে। তার প্রভাবেই পারদ পতন!
আরও পড়ুন: রাজ্যপালকে চিঠি দিলেন মমতা, ধনখড় বললেন ‘গণতন্ত্রে এটাই কাম্য’
এমন ঠান্ডা ডিসেম্বরে শেষ কবে পড়েছিল, তা নিয়ে চর্চা চলছে। হাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, ডিসেম্বরের শেষে এমন ঠান্ডা বিরল নয়। গত বছরেই ২৯ ডিসেম্বর কলকাতার তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল ১০.৬ ডিগ্রিতে। ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর কলকাতার তাপমাত্রা নেমেছিল ১০ ডিগ্রিতে। ১৯৬৬ সালের ২২ ডিসেম্বর কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭.২ ডিগ্রি। নথিবদ্ধ হিসেবে সেটাই কলকাতায় ডিসেম্বরে সর্বকালের সেরা শীতের রেকর্ড! তবে আবহবিদদের অনেকে বলছেন, প্রবল ঠান্ডা হাওয়া এবং তড়িঘড়ি পারদ পতনের জেরে এ বার শীত যেন বেশি মালুম হচ্ছে।
কোথায় কত
• কলকাতা ১১.১
• দমদম ১০.৮
• ব্যারাকপুর ১০.০
• বহরমপুর ১০.০
• বালুরঘাট ৯.২
• বাঁকুড়া ৮.৫
• পানাগড় ৮.৩
• শ্রীনিকেতন ৭.৪
• পুরুলিয়া ৭.০
• শিলিগুড়ি ৫.০
শনিবারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ডিগ্রি সেলসিয়াসে
উত্তর ভারতে দিল্লির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ২.৪ ডিগ্রিতে। ২০১৩ সালের ৩০ ডিসেম্বরও দিল্লির তাপমাত্রা ২.৪ ডিগ্রি ছুঁয়েছিল। কাশ্মীরের শ্রীনগরে রাতের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের থেকে প্রায় ৬ ডিগ্রি নীচে রয়েছে। লখনউয়ে রাতের তাপমাত্রা নেমে গিয়ে সাড়ে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াসে ঠেকেছে।
গণেশবাবু বলছেন, আজ, রবিবারেও জাঁকিয়ে শীত থাকবে। তবে ফের পশ্চিমী ঝঞ্ঝা রাজ্যের দিকে আসবে। তার ফলে বছরের শেষ দিন থেকে রাতে পারদ কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে। তবে দিনের তাপমাত্রা অনেকটাই কম থাকবে।