সাক্ষী বুদ্ধ: রাজভবনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের মুখোমুখি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি রাজভবন সূত্রে
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক ঘণ্টা বৈঠক করে ‘খুবই সন্তুষ্ট’ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
রাজভবনের বিবৃতিতে সোমবার এ কথা জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ রাজভবনে যান। সরকারের তরফে এ দিনের বৈঠকের ব্যাপারে কিছুই বলা হয়নি। তবে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, রাজ্য শাসন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দু’জনের মধ্যে কথা হয়েছে।
বিভিন্ন বিষয়ে বেশ কিছু দিন ধরে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের ‘সংঘাত’ চলছে। ইতিমধ্যে বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শুরুতে ‘সংবিধান মেনে’ রাজ্য সরকারের তৈরি করে দেওয়া ভাষণ পাঠ করেছেন রাজ্যপাল ধনখড়। তবে বাইরে আইনশৃঙ্খলা-সহ নানা বিষয়ে তাঁর ‘টিপ্পনি’ও অব্যাহত রেখেছেন। সম্প্রতি আচার্যকে না জানিয়ে এবং আমন্ত্রণ না করে সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়েছে, এই অভিযোগে কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যকে শো-কজ করে শিক্ষা দফতরে চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল। তাঁর কাছে এখনও আটকে আছে তফসিলি জাতি ও জনজাতি কমিশন গড়ার বিল। বিধানসভায় পাশ হয়ে যাওয়া গণপ্রহার প্রতিরোধ বিলেও তাঁর সম্মতি মেলেনি।
আরও পড়ুন: দেশে মন্দা, তবু রাজ্য চাঙ্গা, দাবি অমিতের
রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দেখা করতে যাওয়া সাংবিধানিক রীতির মধ্যেই পড়ে। তবে বর্তমান পরিস্থিতির কারণেই মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপালের বৈঠক নিয়ে এ বার কৌতূহল তৈরি হয়েছিল। রাজভবন জানিয়েছে, বৈঠক হয়েছে একেবারেই একান্তে। মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল ছাড়া কোনও তৃতীয় ব্যক্তি সেখানে ছিলেন না। ফলে, আলোচনার বিষয়বস্তুও প্রকাশ্যে আসেনি। শুধু রাজ্যপাল টুইটে মন্তব্য করেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার এক ঘণ্টার আলোচনা খুবই সন্তোষজনক।’’ পর্যবেক্ষকদের অনেকের ধারণা, এ দিনের বৈঠকের পরে বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়ে রাজভবনের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের বরফ কিছুটা গলতে পারে।
বৈঠকের শেষ দিকে রাজ্যপালের স্ত্রী সুদেশ ধনখড়ও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে আসেন। মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে গিয়েছিলেন ফুল-মিষ্টি। রাজ্যপাল তাঁকে চা-পানে আপ্যায়িত করেন। বস্তুত, একাধিক বার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে চা খাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন ধনখড়।
রাজ্যের প্রশাসনিক ও সাংবিধানিক প্রধানের বৈঠক নিয়ে এ দিন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজ্যপালের জন্য কালো পতাকা আছে, হেলিকপ্টারও আছে। হাসি-কান্নার খেলা চলুক। শুধু রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাতে রাজ্যের কাজকর্ম যেন ব্যাহত না হয়।’’ বিরোধী দলের সচেতক, কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘এমন বৈঠক স্বাভাবিক। স্বাভাবিক বৈঠক অন্য সময় কেন হয় না আবার কেন এখন হল, সেটা ওঁরাই বলতে পারবেন!’’