CM Mamata Banerjee

নবান্ন সভাঘরে আদিবাসী উন্নয়ন উপদেষ্টা কমিটির সঙ্গে বৈঠকে মমতা, এলেন না খগেন, দশরথ!

বৈঠকে আদিবাসী সমাজে জনসংযোগ বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিভিন্ন ভাষাভাষী আদিবাসী মানুষের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছনোর লক্ষ্যে স্থানীয় বিধায়কদের আরও সক্রিয় করার কথা বলা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৪ ২১:০৬
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

সোমবার নবান্ন সভাঘরে আদিবাসী উন্নয়ন উপদেষ্টা কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে আদিবাসী সমাজে জনসংযোগ বাড়ানোর উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে আদিবাসী গোষ্ঠীগুলির ভাষা এবং সংস্কৃতি রক্ষার উপরেও।

Advertisement

নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবারের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আদিবাসীদের জমি জবরদখল হচ্ছে। আদিবাসীদের জমির অধিকার শুধুমাত্র তাদের। সেটা কেউ কুক্ষিগত করতে পারবেন না। এ বিষয়ে সরকার পদক্ষেপ করবে। মানুষের উন্নয়নের জন্য, আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য সরকারের দরজা সবসময় খোলা।’’ উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্কের সিংহ ভাগই চলে গিয়েছিল বিজেপির দখলে। কিন্তু গত বিধানসভা ভোট থেকেই বেশ কিছুটা জমি ফেরাতে সফল হয়েছে তৃণমূল। চলতি বছরের লোকসভা নির্বাচনেও টলেনি সেই সিংহাসন। এর পরেই আদিবাসী সমাজের উন্নয়নের দিকগুলি আলোচনা করতে আদিবাসী উন্নয়ন উপদেষ্টা কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসেছে তৃণমূল। যদিও আগে থেকেই তৃণমূলের দাবি ছিল, এর সঙ্গে ভোট রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। আদিবাসীদের দাবিগুলিকে মান্যতা দেওয়াই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লক্ষ্য।

সোমবারের বৈঠকেও আদিবাসী সমাজে জনসংযোগ বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিভিন্ন ভাষাভাষী আদিবাসী মানুষের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছনোর লক্ষ্যে আদিবাসী এলাকাগুলিতে বিধায়কদের আরও সক্রিয় করার কথা বলা হয়েছে। আদিবাসী অধ্যুষিত জেলাগুলিতে ভাষা ও সংস্কৃতির প্রসারের জন্য পৃথক কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদিবাসী অধ্যুষিত জেলাগুলির প্রতিটি অঞ্চলে সমীক্ষা চালিয়ে ভাষা, সাহিত্য এবং সংস্কৃতির প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা নেবে নয়া এই কমিটি। ইতিমধ্যেই এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত করতে চার জন মন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছে নবান্ন।

Advertisement

পাশাপাশি, পাহাড় এবং আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। এই জায়গাগুলিতে আরও বেশি সংখ্যায় হোমস্টে গড়ে তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে আদিবাসীদের জমি যাতে জবরদখল না হয়, সে জন্য হোমস্টে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আদিবাসীরাই অগ্রাধিকার পাবেন। পাবেন সরকারি সাহায্যও। সরকারের তরফে তাঁদের যথাযথ প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। পর্যটনের পাশাপাশি আদিবাসীদের খাদ্য, জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি রক্ষা এবং প্রসারেও বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হবে। রাজ্যের ৪০টি আদিবাসী সম্প্রদায়ের কথা মাথায় রেখেই এ বার তাদের উন্নতিকল্পে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। মমতার দাবি, এর আগের বৈঠকে আদিবাসী উন্নয়ন উপদেষ্টা কমিটির তরফে যে সমস্ত দাবিদাওয়া পেশ করা হয়েছিল, তার সিংহভাগই পূরণ হয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আদিবাসী উন্নয়নে কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। তাই আর্থিক সাহায্য এখনই সম্ভব নয়। কিন্তু সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে সরকারের দরজা সব সময় খোলা রয়েছে।

উল্লেখ্য, সোমবারের বৈঠকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি তথা মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তিনি আসেননি। অনুপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা দশরথ তিরকেও। তাঁদের অনুপস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে নানা মহলে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement