রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথকে বাউল শিল্পীদের সঙ্গে নিয়ে প্রতীচীর সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে বসার নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
অমর্ত্য সেন-বিশ্বভারতী বিতর্কে নয়া মাত্রা। রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিন্হাকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, বাউল শিল্পীদের নিয়ে নোবেলজয়ীর শান্তিনিকেতনের বাড়ি ‘প্রতীচী’র সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে বসার। কবে অবস্থানে বসা হবে তা জানিয়ে দিয়েছেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ।
বিগত বেশ কিছু দিন ধরেই ভারতরত্ন অমর্ত্য সেনের সঙ্গে জমি বিবাদে জড়িয়ে পড়েছেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি নোবেলজয়ীকে ১৫ দিনের ‘চরম সময়সীমা’ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়। অমর্ত্যকে পাঠানো চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, ১৫ দিনের মধ্যে জমি খালি করে দেওয়া না হলে প্রয়োজনে বল প্রয়োগ করে জমি ফিরিয়ে নেওয়া হবে। যা শুনে বিজেপিকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘বাংলায় ওরা আগুন নিয়ে খেলছে। আমি ওদের ঔদ্ধত্য দেখেছি। বলতে শুনেছি, ওরা অমর্ত্য সেনের বাড়ি বুলডোজ়ারে গুঁড়িয়ে দেবে। যদি ওরা ওঁর বাড়ি ভাঙে আমি গিয়ে বসব ওখানে। আমি লড়াই করব। আমি দেখতে চাই ওরা যা করবে বলছে সেটা ওরা কী করে করে। যদি সেটা হয় তবে আমি সবার আগে সেখানে যাব। এবং ওখানে গিয়ে বসব।’’
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দেওয়া ১৫ দিনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামী ৬ মে। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে আগামী ৬ এবং ৭ মে অমর্ত্যের শান্তিনিকেতনের বাড়ির সামনে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিন্হাকে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে বসার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের জমি ‘দখল’ রুখতে চন্দ্রনাথকে বাউল শিল্পীদেরও সঙ্গে নেওয়ার কথা বলেছেন মমতা।
গত ২০ এপ্রিল নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে পাঠানো চিঠিতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, অনুমোদিত দখলদার উচ্ছেদ আইন ১৯৭১ ধারা ৫-এর উপধারা ১-এর অধীনে ক্ষমতা প্রয়োগ করে ফেরানো হবে বিতর্কিত ১৩ ডেসিমেল জমি। ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ৬ই মে-র মধ্যে বিশ্বভারতীর প্লট নম্বর ২০১ উত্তর-পশ্চিম কোণে অর্থাৎ এল আর প্লট নাম্বার ১৯০০/২৪৮৭ সুরুল মৌজার ১৯০০ জেএল নম্বর ১০৪ পাবলিক সম্পত্তির উপর অনুমোদিত দখল জমি খালি করা নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত যুগ্ম কর্মসচিব ও এস্টেট অফিসার। ওই সময়সীমার মধ্যে জমি খালি করা না হলে কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারির পাশাপাশি প্রয়োজনে বলপ্রয়োগের মাধ্যমেও ১৩ ডেসিমেল জমি খালি করার নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সেই ৬ মে তারিখেই প্রতীচীর সামনে অবস্থানে বসতে চলেছেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ। তাঁর সঙ্গে থাকার কথা বাউল শিল্পীদের। স্বভাবতই জমি কাড়তে বিশ্বভারতীয় বলপ্রয়োগের হুশিঁয়ারি নিয়ে আরও জলঘোলার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়দের একাংশ।