মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।
জল ছাড়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোপের মুখে জলাধার কর্তৃপক্ষগুলি। শুক্রবার এক টিভি চ্যানেলকে টেলিফোনে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘না জানিয়ে ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া পাপ। এটা অপরাধ।’’
একটানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ার পাশাপাশি বেড়েছে নদীগুলির জলের স্তর। এর মধ্যেই মাইথন, পাঞ্চেত, ডিভিসি-র মতো জলাধার থেকে জল ছাড়ার নদীগুলি ফুলে ফেঁপে উঠেছে। দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বেশ কিছু গ্রাম ইতিমধ্যেই প্লাবিতও হয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই ফের সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী। ফের এক বার এই বন্যাকে ‘ম্যানমেড’ বলে অভিহিত করলেন।
রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছাড়ার বিষয়টি নিয়ে হতাশ মুখ্যমন্ত্রী। মমতা এ নিয়ে বলেছেন, ‘‘কত বার বলেছি না বলে জল ছাড়বেন না। বলতে বলতে হতাশ হয়ে যাচ্ছি। না জানিয়ে রাত ৩টের সময় যদি জল ছেড়ে দেয়, তা হলে তো মানুষ ঘুমন্ত অবস্থাতেই ভেসে যাবে। এটা পাপ। এটা অপরাধ। আগে থেকে জানলে তো আমরা মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যেতে পারি।’’ এর পরই তাঁর তোপ, ‘‘জল ছেড়ে কেন বন্যা ঘটাবে? ঝাড়খণ্ডের বোঝা আমরা কেন নেব?’’ বানভাসি এলাকার মানুষদের কাছে প্রশাসনের সব রকম সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।
মাইথন থেকে ছাড়া হচ্ছে জল। নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবার সকালেই মাইথন জলাধার থেকে ৮০ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত থেকে ৫৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। অন্য দিকে, দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে দেড় লক্ষ কিউসেকেরও বেশি জল ছাড়া হয়েছে। এতেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে জেলা প্রশাসনগুলির কপালে। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য জেলা প্রশাসনগুলিকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। গত জুলাই-অগস্টেই জলাধার থেকে জল ছাড়ায় হুগলি, হাওড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বেশ কয়েকটি নদীবাঁধ ভেঙেও গিয়েছিল। এর জেরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছিল ওই এলাকার মানুষের।