মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়—ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘জঙ্গলমহল স্বীকৃতি সম্মান’ দেবে পুরুলিয়া সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়। মার্চের প্রথম সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন হওয়ার কথা। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে সম্মানিত করা হবে বলে বৃহস্পতিবার জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নচিকেতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০১৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে সাম্মানিক ডি লিট উপাধি তুলে দেন তৎকালীন আচার্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। তার পরে আবার রাজ্যের কোনও বিশ্ববিদ্যালয় মুখ্যমন্ত্রীকে সম্মানিত করার কথা জানাল। রেজিস্ট্রার নচিকেতাবাবু জানান, জঙ্গলমহলের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং বিস্তীর্ণ এলাকার উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রীর কাজকে স্বীকৃতি দিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ভাবনা। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রীকে এই সম্মান গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সম্মতি মিলেছে।
‘জঙ্গলমহল স্বীকৃতি সম্মান’ এই বছরই প্রথম দিচ্ছে সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি, ‘পুরুলিয়া সম্মান’ শীর্ষক আরও একটি পুরস্কার দেওয়া হবে। তবে পুরস্কার দু’টি প্রতি বছর দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত ভাবে কিছু জানানো হয়নি। নচিকেতাবাবু বলেন, ‘‘বিষয়টি ইউনিভার্সিটির কোর্টেই ঠিক হবে।’’
মুখ্যমন্ত্রীকে ডি লিট দেওয়ার কথা ঘোষণা করার পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নানা প্রশ্নের মুখে পড়েছিল। পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জঙ্গলমহল স্বীকৃতি সম্মান’ নিয়েও শুরু হয়েছে বিতর্ক। গেরুয়া শিবিরের শিক্ষক সংগঠন ‘অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শৈক্ষিক মহাসঙ্ঘ’-র জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের সহ-সভাপতি গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এত দিনের বিশ্ববিদ্যালয়, কখনও এমন ঘটেনি। সোনার পাথরবাটি এবং কাঁঠালের আমসত্ত্বের কথা আমরা শুনেছি। এ বার প্রত্যক্ষ করলাম।’’ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ওয়েবকুটার পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বাবর আলি মিদ্যা বলেন, ‘‘কর্মসমিতি কাউকে সম্মান দেওয়ার জন্য নির্বাচন করতে পারেন। কিন্তু অনেক অরাজনৈতিক ব্যক্তি নানা গঠনমূলক কাজ করে চলছেন। তাঁদের তুলে ধরলে বিনা বিতর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের গরিমা অক্ষুণ্ণ থাকে।’’
শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার জেলা সভানেত্রী তথা সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির আহ্বায়ক সাধনা খাওয়াস অবশ্য বলছেন, ‘‘কোর্ট মেম্বার ও ইসি মেম্বারদের ধন্যবাদ জানাই এই সিদ্ধান্তের জন্য। জঙ্গলমহলে গত ন’বছরে মুখ্যমন্ত্রী প্রচুর কাজ করেছেন। বিশেষত শিক্ষার বিস্তারে। তিনি যে এই সম্মান গ্রহণ করছেন, তাতে আমরা আপ্লুত।’’