মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পিটিআই।
সব কয়লা-মাফিয়া এখন বিজেপির সঙ্গে রয়েছে—পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জে প্রশাসনিক সভা থেকে এমনই অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ‘অবৈধ’ কয়লার কারবার ঘিরে রাজ্যে সিবিআই-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থা তদন্ত-অভিযান চালাচ্ছে। এমন আবহে মঙ্গলবার অবৈধ কয়লার কারবারে বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের যোগাযোগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা। তবে এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি।
মমতা বলেন, ‘‘কয়লা মাফিয়াদের নিয়ে বড়-বড় কথা বলছে। কয়লা সংস্থা কেন্দ্রের অধীনে। আমাদের নয়। তাদের পুলিশ ও সিআইএসএফ আছে। এর পরেও কয়লা লুট হবে কী ভাবে?’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আগে আমি কেন্দ্রীয় সরকারকে বলেছিলাম, কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে অবৈধ ক্ষেত্রগুলিকে আইনি করা হোক। তা হলে যে লোকগুলো প্রতিদিন বিপদের ঝুঁকি নেয়, তাদের ভবিষ্যৎ হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘‘কেন্দ্র কিছু করেনি। করবেও না।’’
অসমর্থিত সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম বর্ধমানের নানা এলাকায় ১৬টি ‘অবৈধ’ খোলামুখ খনি ও প্রায় পাঁচ হাজার কুয়ো-খাদান রয়েছে। এগুলিতে যুক্ত প্রায় কুড়ি হাজার ‘শ্রমিক’। দৈনিক প্রায় এক লক্ষ টন কয়লা পাচার হত এই খনিগুলি থেকে। সম্প্রতি সিবিআই কুনস্তরিয়া এরিয়ার জিএম কার্যালয়, ঝাঁঝরা এরিয়ার দু’টি কোলিয়ারি ও সাঁকতোড়িয়ায় সংস্থার সদর দফতরে অভিযান চালিয়েছিল। দুই আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ ও এক আধিকারিকের দফতর ‘সিল’ও করেছে তারা। এর আগেও পশ্চিমবঙ্গ-সহ মোট চার রাজ্যে অভিযান চালিয়েছিল সিবিআই। হয়েছিল আয়কর-হানাও।
কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির অভিযানের পরে, অবৈধ খনিগুলি বন্ধ। অধিকাংশ কয়লা ‘মাফিয়া’ গা-ঢাকা দিয়েছে। নজরদারি এড়াতে মোবাইল ব্যবহারও করছে না তারা, এমনই দাবি সূত্রের।
বিজেপির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা দলগত ভাবে এবং প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে এই অবৈধ কারবার বন্ধের আর্জি জানিয়েছিলাম। তার পরেই ব্যবস্থা হচ্ছে। তাতে তৃণমূলের অসুবিধা হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী এখন মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন।’’ পাশাপাশি, সিআইএসএফ, ইসিএল-এর কর্তাদের দাবি, খবর পেলেই নিয়মিত অভিযান চালিয়ে অবৈধ কয়লা খনন বন্ধ করা হয়।