পুজোর উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পিটিআই।
করোনা ঠেকাতে ক্লাবগুলির দায়িত্ব অনেক: মুখ্যমন্ত্রীকরোনা রুখতে এ বার দুর্গাপুজোয় সংগঠক ক্লাবগুলির দায়িত্ব অনেক বেশি বলে স্মরণ করালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খোলামেলা মণ্ডপ, মাস্ক এবং হাতশুদ্ধিই যে এ বারের পুজোর মূল ‘থিম’ তাও বার বার বোঝালেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে মায়ের নামে শপথ করে মমতা বলেন, ‘‘মাগো, ভুল ত্রুটি কিছু হয়ে থাকলে ক্ষমা করে দিও। আমরা কিন্তু ছিলাম, আছি, থাকব। আজ যে নবান্ন থেকে পুজো উদ্বোধন করছি, তা আপনারা (বঙ্গবাসী) আমাদের নির্বাচিত করেছেন বলেই সম্ভব হচ্ছে। সারাক্ষণ এখানে থেকে কাজ করে চলেছি। আপনারা আছেন বলেই নিরন্তর কাজ করে চলেছি।’’
এ দিন নবান্ন সভাঘর থেকে দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, দুই ২৪ পরগনার শতাধিক পুজোর ভার্চুয়াল মাধ্যমে উদ্বোধন করেন মমতা। জেলায় জেলায় প্রতিটি পুজোর মঞ্চে পুজো উদ্যোক্তা, প্রশাসনিক কর্তাদের পাশাপাশি পুলিশ কর্তাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে ছোট পুজো, মহিলা পরিচালিত পুজো এবং ‘গরিব’ পুজোগুলোকে সাহায্য করার অনুরোধ করেন। কোনও পুজো কমিটি স্যানিটাইজ়ার জোগাড় করতে না পারলে পুলিশকে তার ব্যবস্থা করতে বলেন। এক একটি জেলার গুচ্ছ উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী কখনও চণ্ডীপাঠ, কখনও দেবীমন্ত্রপাঠ করেন। কখনও শাঁখ বাজান, ঘন্টাও বাজান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনারাও বাজাচ্ছেন আমিও বাজাচ্ছি। প্রতিদিন আমি শাঁখ বাজাই। এনআরসি-সিএএ প্রতিবাদের সময়ও ঘন্টা বাজিয়েছি। এখন মায়ের আরাধনায় বাজাচ্ছি। ঘন্টা বাজাতে আমার খুব ভাল লাগে।’’
শুধু মুখ্যমন্ত্রী নন, তথ্য সংস্কৃতি মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনও উদ্বোধনের তালে তালে ঘন্টা বাজান। গানের তালে কলকাতার মেয়র তথা পুরমন্ত্রীকে টেবিল বাজাতে দেখা যায়। আর জেলায় জেলায় পুজো কমিটিগুলোর সদস্য-সদস্যা এবং শাসক দলের নেতাদের ঢাকের তালে নাচতেও দেখা গিয়েছে। জেলার পুজো মণ্ডপগুলিতে ভিড় ছিল, তবে অধিকাংশের মুখে মাস্কও ছিল।
আরও পড়ুন: মণীশ খুনের তদন্তে বিহারে গেল সিআইডি
আরও পড়ুন: ভাঙড়ে রাজ্জাকের মৃত্যু, ভাল আছেন রেজ্জাক
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন মা দুর্গার কাছে করোনা, বেকারি, অশান্তি, কুৎসা, দাঙ্গা, অপপ্রচার থেকে মুক্তি দিতে প্রার্থনা করেন। সাধারণ মানুষের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ, জ্বর হলেই ডাক্তার দেখান। অবহেলা করবেন না। করোনা ঠেকাতেই হবে। তাই উৎসবের মাঝেও সতর্ক হয়ে চলতে হবে। এ দিন জেলার পুজো সূচনা পর্বে আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও সতর্ক করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, আগে জঙ্গলমহলে দুর্গাপুজো করাই সম্ভব হত না। সেই অবস্থা বদলেছে। মানুষ এখন শান্তিতে পুজো দেন। জামবনির কনকদুর্গা মন্দিরে ২ কোটি টাকা অর্থ সাহায্য করার কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সেখানে তাঁর নামে সঙ্কল্প করে পুজো দেওয়ার জন্য স্থানীয় দলের নেতাদের অনুরোধ করেন। পুরুলিয়া থেকে বিমান চালানোর চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।