গ্রাফিক— সনৎ সিংহ।
দুর্গাপুরে দুই বর্ধমানের প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকে উঠে এল সিবিআই প্রসঙ্গ। ওই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তদন্তের নামে বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিদের ডেকে হেনস্থা করছে বলে অভিযোগ করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বস্তুত, সিবিআই তদন্তকে ‘হ য ব র ল’ বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। সিবিআই এবং ইডি-র মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে বরাবরই আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়েছেন মমতা। বুধবার দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকের মঞ্চ থেকে আরও একবার সেই আক্রমণে শান দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ভোট পরবর্তী হিংসা-সহ একাধিক মামলায় রাজ্যে তদন্ত করছে সিবিআই। তদন্তের প্রয়োজনে নেতা থেকে সাধারণ মানুষ— সিবিআই দফতরে ডাক পড়ছে অনেকেরই। এ বার তাতে সরাসরিই নিজের অসন্তোষ ব্যক্ত করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সিবিআই ‘অত্যাচার’ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। দুর্গাপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বলেন, ‘‘এখানে একটা কেস চলছে সিবিআইয়ের। তোমরা জানো। সেটাকে কেন্দ্র করে মামলায় জেরা করার জন্য বীরভূমের গরিব এক টোটোচালককে ডেকেছিল সিবিআই। বিভিন্ন পেশার মানুষদেরও ডেকে পাঠানো হচ্ছে। নামী চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরীকেও ডেকে পাঠানো হচ্ছে।’’
একইসঙ্গে মমতা জানান, সাংবাদিকদেরও ডেকে পাঠিয়ে হেনস্থা করছে সিবিআই। একাধিক সাংবাদিকের নামও তিনি করেন মঞ্চ থেকে। মমতার কথায়, ‘‘তৃণমূলের বিধায়ক, পঞ্চায়েত সদস্যদেরও ডেকে হেনস্থা করা হয়েছে। এক হাজার লোককে একটা কেসে ডাকা হচ্ছে। যাকে পারছে সিবিআই ডাকছে। হ য ব র ল হচ্ছে!’’ মুখ্যমন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট, সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের ডেকে পাঠিয়ে ‘হেনস্থা’ করা হচ্ছে বলে তিনি মনে করছেন। এবং সেই ঘটনাপ্রবাহে তিনি সন্তুষ্ট নন।
গত ১৬ জুন গরুপাচার মামলায় সিবিআই ডেকে পাঠায় এক টোটোচালককে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, ওই টোটো চালকের সঙ্গে ‘যোগাযোগ’ রয়েছে তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতাদের। সিবিআইয়ের ডাকে গিয়ে হাজিরা দিতে হয়েছিল প্রবীণ চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী-সহ একাধিক সাংবাদিককেও। মমতার বক্তব্য, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই কেন্দ্রীয় সরকার সিবিআইকে দিয়ে এ সব করাচ্ছে। তবে প্রশাসনিক বৈঠকে এক বারও বিজেপির নামোচ্চারণ করেননি মমতা।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।