ফাইল চিত্র।
তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের মামলায় রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিল সিআইডি। চার্জশিটে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের নাম থাকলেও তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ আনা হয়নি। তাঁর বিষয়ে আরও তদন্ত করার জন্য সময়
চেয়েছে সিআইডি। আদালত তিন মাস মঞ্জুর করেছে।
এই মামলায় গত বছর ১৪ জুন তিন জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছিল। সোমবার দুপুরে নদিয়ার রানাঘাটে এসিজেএম আদালতে এই অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী অফিসার কৌশিক বসাক। ওই আদালতের সরকারি আইনজীবী প্রদীপ প্রামাণিক বলেন, “অতিরিক্ত চার্জশিটে জগন্নাথ সরকারকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন) এবং ১২০(বি) (ষড়যন্ত্র) ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। মুকুল রায়কে সন্দেহভাজনের তালিকায় রাখা হয়েছে।” অতিরিক্ত দায়রা বিচারকের এজলাসে মামলাটি চলছে। এসিজেএম প্রত্যয়ী চৌধুরী আগামী ১৪ অক্টোবর জগন্নাথকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে সমন জারি করেছেন।
গত বছর ৯ ফেব্রয়ারি, সরস্বতী পুজোর আগের রাতে নদিয়ার হাঁসখালিতে বাড়ির কাছেই গুলিতে খুন হন কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ। তদন্তে নেমে সিআইডি পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। পরে তিন জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হয়, প্রমাণাভাবে নিষ্কৃতি পান দু’জন। এফআইআর-এ মুকুল ও জগন্নাথের নাম ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে থাকলেও ওই চার্জশিটে তা ছিল না। খুনের পরে যিনি লিখিত অভিযোগ করেছিলেন, সেই মিলন সাহা গত বছর ২০ অগস্ট রিভিশন পিটিশন দাখিল করে দাবি করেন, দুই নেতার বিরুদ্ধে তদন্ত চলায় তাঁদের নাম চার্জশিট থেকে বাদ যাওয়া আইনসঙ্গত হয়নি। ১৬ ডিসেম্বর আদালত তা মেনে নিয়ে জানায়, দুই নেতার বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে।
গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, তাদের হাতে আসা ‘কল ডিটেল রেকর্ড’ অনুযায়ী খুনের পরের দু’দিনে মূল অভিযুক্ত অভিজিৎ পুন্ডারির সঙ্গে ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ হয় জগন্নাথের। গত ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে কয়েক দিন ভবানী ভবনে জিজ্ঞাসাবাদও করে সিআইডি। তবে রাতে দিল্লি থেকে সাংসদ দাবি করেন, ‘‘একই সংস্থা প্রশ্ন করছে, আমি একই উত্তর দিচ্ছি, অথচ তারা দু’বার দু’রকম চার্জশিট দিচ্ছে। এটা ভোটের আগে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়।” আর মুকুলের প্রতিক্রিয়া, “পুরোটাই তো জাল। প্রথমে চার্জশিটে নাম বাদ দেওয়া হল, আবার ঢোকানো হল। এই ঘটনার বিন্দুবিসর্গ আমি জানি না।”
বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহের দাবি, “জগন্নাথ সরকারের কাছে অভিযুক্ত আশ্রয় চেয়েছিল, তিনি দেননি। এই সামান্য কারণে তাঁর নাম চার্জশিটে রাখা যায় কি? ভোটের আগে বিজেপি নেতাদের ফাঁসানো বাড়ছে।” জগন্নাথ বলেন, “যতই চাপ তৈরি করা হোক, মুকুলদা আমাদের সেনাপতি হিসেবে বিজেপিতেই থাকবেন।”