ভাঙা হবে না চিংড়িঘাটা উড়ালপুল, জানালেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ফাইল চিত্র।
ভাঙা হবে না ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন (ইএম) বাইপাস সংলগ্ন চিংড়িঘাটা উড়ালপুল। সাফ জানিয়ে দিলেন কলকাতার মেয়র তথা পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শনিবার কলকাতা পুরসভায় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘কোনও ভাবেই চিংড়িঘাটা উড়ালপুল ভাঙা হবে না। বামফ্রন্টের সময় তৈরি এই উড়ালপুলটির নকশাতেই একটি ত্রুটি রয়ে গিয়েছে। উড়ালপুল এখন ঠিক আছে। সমস্যা ছিল, কিন্তু এখন আমরা মেরামতির কাজ করে দিয়েছি।’’
চলতি বছর জুলাই মাসে প্রশাসনিক স্তর থেকে জানা গিয়েছিল, চিংড়িঘাটা মোড়ের উড়ালপুলের অবস্থা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে, সেই বিষয়ে তড়িঘড়ি বৈঠকে বসতে বাধ্য হন রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা। গত ২১ জুলাই বিধাননগরে কেএমডিএ-র অফিসে চিংড়িঘাটা উড়ালপুলের বর্তমান অবস্থা নিয়ে বৈঠক হয়। কেএমডিএ-র সিইও ছাড়াও কেএমডিএর রাস্তা ও সেতু বিভাগের ইঞ্জিনিয়াররা এবং পরামর্শদাতা সংস্থার শীর্ষকর্তারা হাজির ছিলেন। তার পরেই সিদ্ধান্ত হয়, আপাতত কিছু দিন বিকল্প ব্যবস্থায় যান চলাচল করবে চিংড়িঘাটা উড়ালপুলে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, উড়ালপুলের প্রতিটি স্প্যানের নীচে অতিরিক্ত পিলার বসিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। তবে উড়ালপুলের নীচ দিয়ে যানবাহন ও মানুষ যাতায়াত করে। তাই সেখানে পিলার না বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
পরে পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে বিধানসভার বাদল অধিবেশনের মধ্যেই বিধানসভাতেই বিষয়টি নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও হয়েছিল। সেই বৈঠকে ছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ-সহ আবাসন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, পুর ও নগরোন্নয়ন সচিব খলিল আহমেদ, কলকাতা মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)-র সিইও বিজয় ভারতী-সহ প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা। সেই সময় কেএমডিএ-র এক আধিকারিক দাবি করেছিলেন, এই উড়ালপুল নির্মাণের সময়েই বড় ধরনের ত্রুটি রয়ে গিয়েছে। তাই এত অল্প সময়ের মধ্যেই উড়ালপুলটি বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। উড়ালপুলের ১৯ ও ২০ নম্বর পিলার দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে খবর। তাই এখনই যান চলাচল নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। তার পর থেকেই মেরামতের কাজ শুরু করেছিল প্রশাসন। আর শনিবার কলকাতার মেয়র জানিয়ে দিলেন, চিংড়িঘাটা উড়ালপুল কোনও ভাবেই ভাঙা হচ্ছে না।
কেএমডিএ সূত্রে খবর, বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে তৈরি হয়েছিল ইএম বাইপাস সংলগ্ন চিংড়িঘাটা উড়ালপুলটি। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘মেগা সিটি’ প্রকল্পের অধীনে চিংড়িঘাটা মোড় থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভে যাতায়াতের সুবিধার্থে ৬০০ মিটার দীর্ঘ এই উড়ালপুল তৈরি করা হয়েছিল। নির্মাণের সময়তেই এই উড়ালপুলে গলদ থেকে গিয়েছিল বলেই দাবি করছে বর্তমান প্রশাসন।