রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। — ফাইল চিত্র।
বৃহস্পতিবার রাজভবনে গেলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিব। নবান্ন সূত্রে খবর ছিল, বিকেল ৫টা নাগাদ রাজভবনে উপস্থিত থাকতে পারেন মুখ্যসচিব বিপি গোপালিক এবং রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী। সেই মতো প্রায় সাড়ে ৫টা নাগাদ একই গাড়িতে রাজভবনে পৌঁছন মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিব। সন্দেশখালির ঘটনায় ৫ জানুয়ারি, গত শুক্রবার তাঁদের তলব করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাঁদের কাছে ইডি আধিকারিকদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টও চেয়েছিলেন তিনি। তলবের ছ’দিন পর রাজভবনে গেলেন তাঁরা।
সন্দেশখালির ঘটনার পর বিবৃতি দিয়ে প্রশাসনকে দায়ী করেছিলেন রাজ্যপাল। তার ‘ফল ভুগতে হবে’ বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন তিনি। আরও জানিয়েছিলেন, সংবিধানের অবমাননা করা হলে রাজ্যপাল হিসাবে তিনি উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবেন। তার পরেই মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে তলব করেছিলেন তিনি। তলব করা হয়েছিল রাজ্যপুলিশের ডিজিকেও।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে হানা দেয় পাঁচ ইডি আধিকারিকের একটি দল। সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীও ছিল। ইডি সূত্রে জানা যায়, রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে সেই হানা। স্থানীয় সূত্রে খবর, সরবেড়িয়া গ্রামে শাহজাহানের বাড়ির দিকে তাঁরা যাওয়ার চেষ্টা করলে রুখে দাঁড়ান গ্রামবাসীদের একাংশ। অভিযোগ, তাঁরা শাহজাহানের অনুগামী। ইডি আধিকারিকেরা তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করলেও ভিতর থেকে কোনও সাড়াশব্দ পাননি। এর পরেই তাঁরা দরজা ভাঙার চেষ্টা করেন। অভিযোগ, সেই সময়েই তাঁদের ঘিরে ফেলে মারধর করা হয়। ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদেরও। এর পর ইডি আধিকারিকদের ধাওয়া করে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করা হয়। ভাঙচুর করা হয় তাঁদের গাড়িতে। সেই সময়েই তিন আধিকারিক জখম হন বলে খবর। তাঁদের সল্টলেকের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
সন্দেশখালির ঘটনা প্রসঙ্গে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করেন যে, “রাজ্যপাল কেন ঘোষণা করছেন না রাজ্যে সাংবিধানিক পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে?” ঘটনাচক্রে, তার পরেই এই ঘটনায় রাজ্যপাল মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিবকে তলব করেন।