আসানসোলে মমতা। ছবি: ফেসবুক।
আবারও কেন্দ্রের ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের কঠোর সমালোচনা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বস্তুত, তাঁর বক্তব্য, কেন্দ্র চিঠি পাঠিয়ে রাজ্যগুলিকে অনুরোধ করছে, তারা যেন চার বছর পর অগ্নিবীরদের সংশ্লিষ্ট রাজ্যে চাকরির ব্যবস্থা করে। কিন্তু তিনি তা মোটেই মানবেন না বলে জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘ওদের পাপ তো আমি নেব না!’’
বস্তুত, মঙ্গলবার আসানসোলে মমতা জানিয়েছেন, তাঁকে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে একজন কর্নেল ওই মর্মে চিঠি লিখেছেন। মমতা সেই কর্নেলের নাম প্রকাশ্যে জানাননি। কিন্তু সরাসরিই বলেছেন, ‘‘রেলে ৮০ হাজার পদ পড়ে আছে। সেটা পূরণ করছেন না! এখন কর্নেলবাবু লেটার লিখেছেন, যাঁরা চার বছর কাজ করবেন, তাঁদের রাজ্য সরকারের কাজে নিন!’’
মমতা সাফ জানান, সেটা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। তাঁর কথায়, ‘‘চাকরি দিলে আমাদের রাজ্যের ছেলেমেয়েকে দেব। তোমাদের পাপ আমি কেন নেব? আপনার ডাস্টবিন আমার ওয়াশিং মেশিনে নেব না।’’
সোমবার পূর্ব বর্ধমানের সভা থেকে থেকে অগ্নিপথ প্রকল্পের কঠোর বিরোধিতা করেছিলেন মমতা। তিনি জানিয়েছিলেন, চার বছর দেশের সেবা করে ‘অবসর’ নয়। অগ্নিপথে চাকরির মেয়াদ করতে হবে ৬০ থেকে ৬৫ বছর। যেমন অন্য বেশ কিছু সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে হয়। মঙ্গলবার পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূলের কর্মী সম্মেলন থেকেও অগ্নিপথের সমালোচনায় মুখর হন তিনি।
অগ্নিপথের সমালোচনায় মঙ্গলবার আরও একধাপ এগিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কটাক্ষ, অগ্নিপথ প্রকল্প চাকরির নামে ‘বিজেপির বুজরুকি’। এমনকি, তাঁর এ-ও দাবি যে, ওই চাকরিতে বেকার যুবক-যুবতী নন, অগ্রাধিকার পাবেন আরএসএস কর্মীরা। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘আসল চালাকি কী জানেন? চার মাসের প্রশিক্ষণ দেবে (অগ্নিপথ)। সেখানেও ওদের শাখা-প্রশাখার (আরএসএস বা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ। যে সংগঠনের সঙ্গে ‘শাখা’ শব্দটি প্রচলিত) লোক চাকরি পাবে । চার বছর তুমি কাজ জোগাড় করবে কোথায়!’’
এই প্রসঙ্গেই কর্নেলের চিঠির বিষয়টি উত্থাপন করেন মমতা। জানান, কেন্দ্রের তরফে এক কর্নেল তাঁকে এ নিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। সেখানে আবেদন করা হয়েছে, রাজ্য সরকার যেন অগ্নিবীরদের অবসরের পর কাজের সুযোগ দেয়। সামগ্রিক ভাবে, অগ্নিপথকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অমিত শাহের ‘খেলা’ বলে মন্তব্য করেন মমতা। তাঁর মতে, অগ্নিপথ প্রকল্প বিজেপির ‘বড় দুর্নীতি’ এবং ‘তামাশা’। মমতা বলেন, ‘‘আমরা চাই, রেল যেন বেসরকারিকরণ না হয়। কোল ইন্ডিয়া যেন বন্ধ না হয়। আমরা চাই, চাকরির নামে এই বুজরুকি বন্ধ হোক!’’