পাহাড়ে চলছে মুষলধারে বৃষ্টি। নিজস্ব চিত্র।
মুষলধারে বৃষ্টি এবং একের পর এক ধসে বিধ্বস্ত অবস্থা পাহাড়ের। উত্তরবঙ্গের বহু জায়গার বানভাসী অবস্থা। বিভিন্ন জায়গায় লাল সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন। বৃষ্টি না থামলে অচিরে বন্যার আশঙ্কা তিস্তা পাড়ের এলাকাগুলিতে।
সোমবার সকাল থেকে দার্জিলিং ও কালিম্পঙে টানা বৃষ্টি চলছে। মঙ্গলবার সকালে পাহাড়ে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমলেও একাধিক জায়গায় ধসের আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা। ইতিমধ্যে গ্যাংটকে তিন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে গ্যাংটক থেকে শিলিগুড়ি ফেরার পথে পড়ুয়াদের একটি বাস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। যদিও এখনও হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে কালিঝোড়ায় ধসের খবর মিলেছে। শিলিগুড়ি থেকে সিকিম ও কালিম্পংগামী রাস্তা আটকে রয়েছে। দু’পাশে গাড়ির দীর্ঘ লাইন। তৈরি হয়েছে যানজট।
শিলিগুড়িতেও চলছে টানা বৃষ্টি। জলমগ্ন একাধিক এলাকা। গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শিলিগুড়িতে বৃষ্টি হয়েছে ৫১ মিলিমিটার, জলপাইগুড়িতে ২০৮ মিলিমিটার, ধূপগুড়িতে ১২৮.৮ মিলিমিটার, ফালাকাটায় ১৮৭.৮ মিলিমিটার, আলিপুরদুয়ারে ১৮৪.৬ মিলিমিটার এবং কোচবিহারে ২৩১.৫ মিলিমিটার।
জলমগ্ন এমন বহু এলাকা।
জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে জারি হয়েছে লাল সতর্কতা। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে একাধিক জায়গায়। আবহবিদরা জানাচ্ছেন, যদি এ ভাবে বৃষ্টি চলতে থাকে তা হলে তিস্তার যে সংরক্ষিত এবং অসংরক্ষিত এলাকা রয়েছে, সেগুলিও ডুবে যাবে। বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। দার্জিলিং, কালিম্পং-সহ বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক ভাবে ধস শুরু হবে। ইতিমধ্যে শিলিগুড়ির অশোকনগর, শক্তিগড়ের মতো জায়গাগুলিতে হাঁটুসমান জল জমে গিয়েছে।
টানা দু’দিনের বৃষ্টিতে করলা নদীর জল উপচে পড়ায় জলের তলায় রয়েছে জলপাইগুড়ি শহরের বিভিন্ন এলাকা। রবিবার রাত থেকে লাগাতার বৃষ্টির জেরে ঘরছাড়া অবস্থায় রয়েছেন জলবন্দি এলাকার বহু মানুষ। শহরের পরেশ মিত্র কলোনি এলাকার বাসিন্দাদের দুর্গতির শেষ নেই। ১ নম্বর ওয়ার্ডের নীচমাঠ এলাকাতেও একই পরিস্থিতি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই এলাকায় প্রতি বছরই এমন সমস্যার মুখে পড়তে হয়। প্রবল বর্ষণে শহরের তিন নম্বর ঘুমটি সংলগ্ন এলাকার পাণ্ডাপাড়া, মহামায়াপাড়া, জয়ন্তীপাড়া-সহ বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। জলবন্দি এলাকায় পরিদর্শন করেছেন জলপাইগুড়ি পুরসভার আধিকারিকরা। অন্য দিকে, জেলার রাজগঞ্জ, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, বানারহাট ব্লকের বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন।
সোমবার রাত থেকে ভুটান পাহাড় এবং ডুয়ার্সে অবিরাম বৃষ্টি এবং আংরাভাসা নদীর জলোচ্ছ্বাসের কারণে জলমগ্ন হয়ে পড়ে গয়েরকাটার বিভিন্ন এলাকা। নদীর জল ঢুকে গয়েরকাটার জ্যোর্তিময়পল্লি, বিবেকানন্দপল্লি, হিন্দুপাড়া, কোংগারনগর এলাকা জলের তলায়। বাড়িতে জল ঢুকে থাকার কারণে এলাকার বেশির ভাগ বাড়িতে উনুনই জ্বলেনি।