মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র
মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভের কারণেই এ বার ভূমি দফতরের নীচুতলার কাজে সরাসরি নজরদারির বন্দোবস্ত করল নবান্ন। ঘটনায় প্রকাশ, জুন মাসের শুরুতে পুরুলিয়ার প্রশাসনিক বৈঠকে নীচুতলার ভূমি দফতরের আধিকারিকদের কাজে বিস্তর ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, ‘‘কীভাবে বিএলআরও অফিস সাধারণ মানুষকে ঘোরাচ্ছে? কী ভাবে বিএলআরও অফিসের বাইরের দুটো দোকানে দালালরাজ চলছে? বাকুঁড়া ও পুরুলিয়া জেলার সফর সেরে কলকাতায় ফিরে ভুমি দফতরের প্রশাসনের বড়সড় পরিবর্তন এনেছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর পদক্ষেপের পর ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাজকে সঠিক দিশা দিতে নীচুতলার কাজে নজরদারির বন্দোবস্ত করেছে নবান্ন।
মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভপ্রকাশের পরেই মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। যে বৈঠকের বিষয়ই ছিল বিএলআরওদের কাজ। সেই বৈঠকের পর নবান্নে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর নিয়ে আরও বেশ কয়েকটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকগুলিতেই স্থির হয়, এ বার থেকে বিএলআরও অফিসগুলির ওপর নজর রাখতে একটি নজরদারি কমিটি তৈরি হবে। ব্লক স্তরের এই কমিটির মাথায় থাকবেন বিডিও, স্থানীয় থানার ওসি ও বিএলআরও। এই কমিটি বিএলআরও অফিসের কাজের রিপোর্ট সময়ে সময়ে নবান্নে পাঠাবেন। তারপরই সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে নবান্ন।
এই কাজে পরীক্ষামূলক ভাবে চার জেলাকে নজরে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, জলপাইগুড়ির ব্লক অফিসগুলিতে এই কমিটি গড়ে কাজ করা হবে। ব্লক পর্যায়ের এই কমিটির কাজ হবে বিএলআরও অফিসে দালালরাজ কায়েম হয়েছে কিনা, সাধারণ মানুষ যে সমস্ত অভিযোগ নিয়ে আসছেন তার প্রতিকার হচ্ছে কিনা, জমির মিউটেশন যথা সময় হচ্ছে কিনা, হলেও তাতে কোনও গরমিল হচ্ছে কিনা। সঙ্গে বালি ও পাথরের খাদানে ভূমি আইনমাফিক কাজ হচ্ছে কিনা।
ভূমি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ প্রকাশের পর আমরা অভ্যন্তরীণ তদন্ত করে দেখেছি, বেশকিছু জেলার বিএলআরওদের কাজ নিয়ে যথেষ্ট অভিযোগ রয়েছে। নির্দিষ্ট ভাবে এই চারটি জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে বিএলআরওদের কাজের ওপর তাই নজর রাখছেন মুখ্যসচিবও। এ বার কোনওরকম গাফিলতি বা দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না।’’