মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকে উঠতে পারে রাজ্যপাল প্রসঙ্গ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাজভবন-বিধানসভার সংঘাতের আবহে সোমবার বৈঠকে বসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী সোমবার স্পিকার বিমানের ঘরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বৈঠক করবেন। সেই বৈঠকে উঠতে পারে রাজ্যপাল প্রসঙ্গ। সম্প্রতি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে দীর্ঘ চিঠি লিখেছেন বিধানসভার স্পিকার।
এর পর স্পিকার-মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, হাওড়া ও বালি পুরসভায় ভোট করানো নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সঙ্ঘাত চরমে পৌঁছেছে। শুক্রবার হাইকোর্টে অ্যাডভোকেট জেনারেল হাওড়ার বিলে রাজ্যপালের স্বাক্ষরের কথা বললেও, সন্ধ্যায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর জানিয়ে দেন, হাওড়া বিলে স্বাক্ষর করেননি রাজ্যপাল। পরে শনিবার বিরোধী দলনেতার কথায় সায় দিয়ে টুইট করেন ধনখড়। এতে রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্ক যে আরও ‘জটিল’ হবে, তা নিয়ে দ্বিমত নেই রাজনৈতিক মহলে।
এমন আবহে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে স্পিকারের বৈঠকের ফলাফল কী হয়, তার দিকে নজর রাখছেন পরিষদীয় রাজনীতির কারবারিরা। বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী এবং স্পিকার ছাড়াও ওই বৈঠকে থাকতে পারেন রাজ্যের বিশিষ্ট আইনজীবীরা। সেই বৈঠকে কী আলোচনা হবে, তা নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না বিধানসভা সচিবালয়ের আধিকারিকরা। তবে সূত্রের খবর, ওই দিনের বৈঠকে আলোচনা হতে পারে বিধানসভার সচিবালয়ের ক্ষমতা বৃদ্ধি নিয়ে। কারণ প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, বিধানসভার সচিবালয় তথা স্পিকারকে কোনও কাজ করতে গেলে তা পরিষদীয় দফতর মারফত করতে হয়। এমনকি, বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে গেলেও পরিষদীয় দলের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয় বিধানসভাকে। বিধানসভার হাতে অধিবেশন ডাকা-সহ একাধিক অধিকার দেওয়ার লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী স্পিকার-সহ আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে সূত্রের খবর। পরিষদীয় দফতরের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে কাজ করার ফলে অনেক কাজের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা হচ্ছিল। তাই বিধানসভার সচিবালয়ের ক্ষমতা বৃদ্ধির নিয়ে আলোচনা জরুরি হয়ে পড়েছে বলে বিধানসভা সূত্রে খবর। প্রসঙ্গত, ক্ষমতায় আসার পর থেকে পরিষদীয় দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
তবে আরও একটি সূত্র জানাচ্ছে, শুধু বিধানসভা সচিবালয়ের ক্ষমতা বৃদ্ধি নয়, লাগাতার রাজ্যপালের ‘অসহযোগিতা’ও এই বৈঠকের মুখ্য বিষয় হতে পারে। গত বিধানসভায় পাশ হয়ে যাওয়া গণপিটুনি বিল এখনও আটকে রয়েছে রাজভবনে। আর হাওড়া সংশোধনী বিলটি রাজ্যপালের স্বাক্ষর না হলে হাওড়া পুরসভায় ভোট করা তো যাবেই না, বালি পুরসভার নির্বাচন আটকে যেতে পারে। তাই রাজ্যপালকে নিয়েও আলোচনা হতে পারে মুখ্যমন্ত্রী-স্পিকারের বৈঠকে।