গোয়ালতোড়ে ছত্রধর। নিজস্ব চিত্র
ছত্রধর মাহাতো ফের এড়ালেন আদালতে হাজিরা। তবে গেলেন কুড়মি সংগঠনের বাঁদনা পরবে। কুড়মি সমন্বয় মঞ্চ ৭ ডিসেম্বর থেকে অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হচ্ছে। তার আগে বুধবারই গোয়ালতোড়ে কুড়মিদের পরবে যোগ দিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধরের আশ্বাস, তাদের দাবিদাওয়া সম্পর্কে দলের নেতৃত্বকে জানাবেন।
বারবার এনআইএ-মামলায় আদালত এড়াচ্ছেন ছত্রধর। সিপিএম কর্মী খুনের ইউএপিএ মামলায় এ দিন ছত্রধর-সহ ২৭ জন অভিযুক্ত কলকাতার বিশেষ আদালতে হাজির হননি। অভিযুক্তের আইনজীবী কৌশিক সিংহ আদালতে দাবি করেন, খড়্গপুর থেকে হাওড়া লোকাল ট্রেন চালু হয়েছে। কিন্তু ঝাড়গ্রাম থেকে এখনও হাওড়া যাওয়ার নিয়মিত ট্রেন চালু হয়নি। তাই পরিবহণ সমস্যার কারণে তাঁর মক্কেল-সহ অন্য অভিযুক্তেরা আদালতে হাজির হতে পারেননি। অভিযুক্তের আইনজীবী আদালতে পরিবহণ সমস্যার কথা জানালেও স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি গাড়ি করে কলকাতায় গিয়ে একটি কালীপুজোর উদ্বোধন করেছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক। এনআইএ-র আইনজীবী শ্যামল ঘোষ এ দিন আদালতে অভিযোগ করেন, ছত্রধর সহ অন্যান্য অভিযুক্তরা ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতে হাজির হচ্ছেন না। তাঁদের বিরুদ্ধে নিদিষ্ট আদেশ জারি করার জন্য আবেদন করেন এনআইএ-র আইনজীবী। বিচারক শুভেন্দু সামন্ত জানিয়ে দেন, ছত্রধর সহ ২৭ জন অভিযুক্তকে আগামী ১৮ ডিসেম্বর কলকাতার বিশেষ আদালতে অবশ্যই হাজির হতে হবে। এনআইএ-র আবেদনক্রমে এগারো বছর আগে বাঁশতলায় রাজধানী এক্সপ্রেস আটকের মামলাতেও ইউএপিএ ধারা যুক্ত করার অনুমতি দিয়েছে আদালত। যদিও রাজধানী আটকের সময়ে ছত্রধর জেলবন্দি ছিলেন।
আদালত এড়ালেও এ দিন গাড়িতে গোয়ালতোড়ের পিংবনির পাটাশোলে বাঁদনা পরবের গরু খুঁটান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন ছত্রধর। তিনি নিজেও যোগ দেন। কুড়মি সমন্বয় মঞ্চের সৌজন্যে ও কুড়মি সেনার পরিচালনায় এই প্রতিযোগিতায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছত্রধর। বিধানসভা নির্বাচনে ছত্রধরকে দলের মুখ করছে তৃণমূল। শাসকদলের অন্দরের খবর, বিগত কয়েকটি নির্বাচনে কুড়মিদের নানা ক্ষোভের প্রকাশ ঘটেছে ইভিএমে। সেই প্রেক্ষিতে বিক্ষোভ অবস্থান শুরুর আগে ছত্রধরের পরবে হাজির হওয়াকে ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মানছে রাজনৈতিক মহল। তৃণমূলের অন্দরের খবর, জঙ্গলমহলের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে শীর্ষ নেতৃত্ব ছত্রধরকে কলকাতায় তলব করেছেন।
কুড়মি সমন্বয় মঞ্চের রাজ্য নেতা চিন্ময় মাহাতো বলেন, ‘‘কুড়মিদের ঘোষিত দাবিগুলির সঙ্গে আমরা ওঁকে (ছত্রধর) বলেছি কুড়মি সম্প্রদায়ের যেসব মনীষী বা স্বাধীনতা সংগ্রামী আছেন সেইসব ব্যাক্তিত্বদের নামে সেতু, বিশ্ববিদ্যালয় সহ নানাক্ষেত্রে নামকরণ করতে।’’ কুড়মি সমন্বয় মঞ্চের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় লালগড়ে নবনির্মিত সেতুর নামকরণ রঘুনাথ মাহাতোর নামে করতে। সব দেখে ছত্রধর বলেন, ‘‘আমি অভিভূত, ১১ বছর পর বাঁদনা পরবের কোনও খুটান প্রতিযোগিতায় থাকতে পেরে খুব ভাল লাগছে।’’
কুড়মি সংগঠনের দাবিদাওয়া প্রসঙ্গে ছত্রধর ফোনে বলেন, ‘‘দাবিদাওয়া পেয়েছি, সেগুলি দেখে তা যথাস্থানে জানানোর আশ্বাস দিয়েছি। আমি যেহেতু একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত, তাই আমার দিক দিয়ে সবরকম চেষ্টা থাকবে।’’