পাঁচ জেলায় স্কুল পরিদর্শনের পাশাপাশি শিক্ষা দফতরের জেলা এবং ব্লক স্তরের দফতরেও যাবে কেন্দ্রের অডিট টিম। — ফাইল ছবি।
রাজ্যে মিড ডে মিল প্রকল্প ঠিক ভাবে চলছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে আবার রাজ্যে আসছে কেন্দ্রের বিশেষ অডিট টিম। পাঁচ জেলায় স্কুল পরিদর্শনের পাশাপাশি শিক্ষা দফতরের জেলা এবং ব্লক স্তরের দফতরেও যাবে ওই অডিট টিম। বৃহস্পতিবারই এই মর্মে রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্র। এ নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, কেন্দ্রীয় দলের উচিত বিভিন্ন স্কুলে আচমকা পরিদর্শন করা। তবেই প্রকৃত ছবি ধরা পড়বে বলে মনে করছেন বিরোধী দলনেতা।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় অডিট টিমে রয়েছেন ছ’জন সদস্য। দলটিকে নেতৃত্ব দেবেন সিনিয়র অডিট অফিসার অরিজিৎ মজুমদার। শুক্রবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলা থেকে শুরু হবে পরিদর্শন। জানুয়ারি মাসেও রাজ্যে মিড ডে মিল প্রকল্প পরিদর্শনে এসেছিল কেন্দ্রীয় দল। বিজেপির অভিযোগ, তখন শিক্ষা দফতরের বাছাই করা স্কুলগুলিতে গিয়েছিল তারা। এ বার তাই শুভেন্দু আগে থেকে সাবধান করে রাখলেন বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের একাংশের।
অন্য দিকে, রাজ্যে একশো দিনের প্রকল্পের কাজ সরজমিনে দেখতে তিনটি কেন্দ্রীয় দল আসছে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘রাজ্যের প্রাপ্য ১ লক্ষ ১৮ হাজার কোটি টাকা এখনও কেন্দ্র আটকে রেখেছে। বিজেপির এ টিম, বি টিম, সি টিম পাঠানো হচ্ছে। এর আগেও টিম এসেছে। তারা কোনও দুর্নীতি খুঁজে পায়নি। তার পরেও এত বার দল পাঠানোর জবাব বাংলার মানুষ দেবে।’’
এর আগে জানুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল এসেছিল মিড ডে মিলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে। সাত দিন ধরে রাজ্যের আটটি জেলার ৩০টি স্কুল ঘুরে, ৮৯৬ জন পড়ুয়ার সঙ্গে কথা বলেছিল তারা। এই পরিদর্শন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিরোধী বিজেপি। রাজ্যের শিক্ষা দফতর যে ভাবে কয়েকটি বাছাই করা স্কুলে ওই দলকে নিয়ে গিয়েছিল, তাতে কি প্রকৃত পরিদর্শন সম্ভব হয়েছিল? তবে তৃণমল সে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিল।
বিজেপির দাবি, সে বার দিল্লির প্রতিনিধিরা স্কুলে গিয়ে দেখেছিলেন, মিড-ডে মিলের রাঁধুনিদের হাতে গ্লাভস, মুখে মাস্ক, পরনে অ্যাপ্রন। গেরুয়া শিবির প্রশ্ন তোলে, সত্যিই কি সব স্কুলে রন্ধনকর্মীরা রোজ ও সব পরে কাজ করেন? তাদের আরও অভিযোগ, দলটি কলকাতার কোনও স্কুল পরিদর্শন করেনি। মহানগরীর স্কুলগুলিতে মিড ডে মিল রান্না হয় ক্লাস্টার কিচেনে। অর্থাৎ একসঙ্গে অনেক স্কুলের রান্না হয় এক একটি রান্নাঘরে। সেই রান্নাঘর থেকে ভ্যানে খাবার নিয়ে যাওয়া হয় স্কুলে স্কুলে। বিজেপির অভিযোগ, এই ক্ষেত্রে যে সব অসুবিধা ও সমস্যা রয়েছে, তা চোখে পড়েনি কেন্দ্রীয় দলের। শুধু জেলার কয়েকটি স্কুল ঘুরে বিকাশ ভবনে শিক্ষা সচিব মণীশ জৈন এবং অন্যান্য শিক্ষাকর্তার সঙ্গে বৈঠক করে ফিরে গিয়েছিলেন প্রতিনিধিরা।
বিজেপির একাংশের দাবি, এ বারও যাতে আগের বারের মতো না হয়, তাই কেমন ভাবে স্কুল বাছাই করা দরকার তা নিয়ে আগেভাগে দাবি জানিয়েছেন শুভেন্দু। একই সঙ্গে মিড ডে মিলের টাকা রাজ্যে অন্য খাতে খরচ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দলনেতা। টুইটে তিনি জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের খরচও পড়ুয়াদের খাবারের টাকা থেকে খরচ করা হচ্ছে।